যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের প্রায় ১৫ হাজার নার্স ধর্মঘট শুরু করেছেন। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় কর্মরতদের উচ্চতর বেতন এবং জনবল সংকট দূর করে আরও ভালো কর্মী নিয়োগের দাবিতে তিন দিনের এই ধর্মঘট শুরু করেছেন তারা।
ধর্মঘট শুরু করা এসব নার্স অঙ্গরাজ্যটির বেসরকারি খাতে কর্মরত। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার মিনিয়াপলিস এবং ডুলুথের সাতটি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় কর্মরত নার্সরা কাজ ছেড়ে বেরিয়ে যান। এসময় তারা ধর্মঘটের পক্ষে স্লোগান দেন এবং কিছু প্ল্যাকার্ড বহন করেন। এতে ‘লাভের আগে রোগী’ (প্যাশেন্টস বিফোর প্রফিটস) এর মতো বার্তা লেখা ছিল।
মিনেসোটা নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (এমএনএ) একজন মুখপাত্রের তথ্য অনুযায়ী, আগামী বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ধর্মঘট স্থায়ী হওয়ার কথা রয়েছে। এই সংগঠনটি নার্সদের ধর্মঘটে যাওয়ার এই পদক্ষেপটি সমন্বয় করছে এবং নার্সরা কাজ বন্ধ করায় ১৬ টি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা বিঘ্নিত হবে বলে জানিয়েছে।
ইউনিয়নটি বলেছে, তারা পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে একটি নতুন চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে এবং নার্সরা বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়াই কাজ করছে।
ইউনিয়নের আলোচনাকারী দল এক বিবৃতিতে বলেছে, হাসপাতালের নির্বাহীরা ইতোমধ্যেই হাসপাতালে জনবল সংকট সমাধানে অস্বীকৃতি জানিয়ে নার্সদের কার্যত দূরে সরিয়ে দিয়েছে। স্টাফ কম হওয়ার কারণে নার্সরা অতিরিক্ত কাজ করে বলেও জানিয়েছেন তারা।
রয়টার্স বলছে, নার্সরা ধর্মঘটে যাওয়ার ফলে মিনিয়াপোলিস এবং পার্শ্ববর্তী সেন্ট পলের আশপাশের কমপক্ষে ১৩টি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা কর্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এই দুই শহরের চারটি হাসপাতালের তত্ত্বাবধান করে টুইন সিটিস হসপিটাল গ্রুপ নামে একটি সংস্থা। তারা বলেছে, নার্সদের ইউনিয়নকে তাদের মধ্যস্থতায় যোগ দিতে বলা হয়েছে।
গ্রুপটি তার ওয়েবসাইটে বলেছে, ‘একজন প্রশিক্ষিত মধ্যস্থতাকারী বিবদমান দলগুলোকে একসাথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় মূল উপাদানগুলোতে ফোকাস করতে সহায়তা করতে পারে। তবে, নার্সদের ইউনিয়ন মধ্যস্থতার জন্য আমাদের সকল অনুরোধই প্রত্যাখ্যান করেছে।’
মিনেসোটা নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, চলমান এই ধর্মঘটকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বলে মনে করা হচ্ছে। মার্কিন স্বাস্থ্যসেবায় নিযুক্ত কর্মীরা কম বেতন ও জনবল ঘাটতির মতো ক্রমাগত যেসব সমস্যার মুখোমুখি হয়ে থাকেন এই ধর্মঘট সেগুলোই সামনে এনেছে।
ইউএস ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিস্টিকস এর তথ্য অনুসারে, করোনাভাইরাস মহামারি স্বাস্থ্যখাতে নিযুক্ত কর্মীদের সমস্যাগুলো অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে এবং ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মার্কিন এই সেক্টরটি প্রায় ৩৭ হাজার কর্মী হারিয়েছে।