এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিমানবন্দরে যাত্রীদের লাগেজ থেকে রেকর্ড সংখ্যক আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। জব্দ করা এসব আগ্নেয়াস্ত্রের সংখ্যা ৬ হাজার ৩০১টি, যার ৮৮ শতাংশই ছিল গুলিভর্তি বা লোডেড।
দেশটির পরিবহন সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (টিসিএ) কর্মকর্তারা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
টিসিএ কর্মকর্তারা জানান, এ বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়ে এসব আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এর আগে বিমানযাত্রীদের লাগেজ থেকে এত সংখ্যক আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়নি।
টিসিএ সূত্রে আরও জানা গেছে, এ বছর সবচেয়ে বেশি অস্ত্র জব্দ হয়েছে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের রাজধানী আটলান্টার হার্টসফিল্ড-জ্যাকসন বিমানবন্দর থেকে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের উত্তরাঞ্চলীয় শহর ডালাসের ফোর্ট উওর্থ বিমানবন্দর।
২০২২ সালের শেষ নাগাদ এ সংখ্যা ৬ হাজার ৬০০ হতে পারে বলে ধারণা করছেন টিসিএ কর্মকর্তারা। সেক্ষেত্রে শতকরা হিসেবে জব্দকৃত অস্ত্রের পরিমাণ হবে গত বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি।
২০২১ সালের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সময়ে দেশটির বিভিন্ন বিমানবন্দরে যাত্রীদের লাগেজ থেকে ৫ হাজার ৯৭২টি ছোট-বড় আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়েছিল।
এদিকে, ঠিক কী কারণে বিমানযাত্রীদের মধ্যে লাগেজে অস্ত্র বহনের প্রবণতা বাড়ছে, তার কোনো ব্যাখ্যা বিবিসিকে দিতে পারেননি টিএসএ কর্মকর্তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনে নাগরিকদের আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয় ও বহনের স্বীকৃতি রয়েছে। এমনকি, বিমানে ভ্রমণের সময়ও যাত্রীরা তাদের সঙ্গে অস্ত্র রাখতে পারেন। তবে বিমান ভ্রমণের সময় অবশ্যই অস্ত্রগুলো খালি থাকতে হবে।
তবে দেশটির আইনে বিমানের কেবিনে গুলিভর্তি অস্ত্র বহনের বিষয়ে কঠোর নিষিধেজ্ঞা রয়েছে। কোনো নাগরিক যদি বিমানে গুলিভর্তি অস্ত্র বহন করেন, তাহলে তার অস্ত্র ক্রয় ও বহন সংক্রান্ত অনুমোদন বাতিল হতে পারে।
এছাড়া বিমানবন্দরে যাত্রীদের লাগেজ পরীক্ষার সময় যদি গুলিভর্তি অস্ত্র পাওয়া যায়, তাহলে তাৎক্ষনিকভাবে ওই যাত্রীকে ১৩ হাজার ৯১০ ডলার থেকে থেকে ১৪ হাজার ৯৫০ ডলার পর্যন্ত জরিমানা করতে পারে টিএসএ। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ১৪ লাখ ৫৫ হাজার ৬৮১ টাকা থেকে ১৫ লাখ ৬৪ হাজার ৫১৭ টাকা।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, দেশটির সাধারণ নাগরিকরা তো বটেই, জনপ্রতিনিধিরাও অনেকসময় আগ্নেয়াস্ত্র আইন মানছেন না।
গত এপ্রিলে নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের শার্লট ডগলাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে গুলিভর্তি অস্ত্রসহ আটক হন দেশটির আইনসভা কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ম্যাডিসন ক্যাথর্ন। জরিমানা দিয়ে তাকে এ দায় থেকে মুক্তি পেতে হয়।