যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয় পেয়েছেন চার বাঙালি কন্যা। তারা হলেন— টিউলিপ সিদ্দিক, রুশনারা আলী, রুপা হক ও আফসানা বেগম। এই চারজনই সদ্য বিজয়ী দল লেবার পার্টির হয়ে নির্বাচনে লড়েছেন।
ব্রিটিশ সরকারে ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে রুপা হক, হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে টিউলিপ সিদ্দিক, বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড স্টেপনিগ্রিন আসন থেকে রুশনারা আলী, পপলার অ্যান্ড লাইম হাউস আসন থেকে আফসানা বেগম জয়ী হয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি রুশনারা আলী। ২০১০ সাল থেকে তিনি টানা চারবার এমপি নির্বাচিত হন। ২০১০ থেকে আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রুশনারা। ২০১৩ সালের অক্টোবরে তিনি ছায়া শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন।
এবারের নির্বাচনে পশ্চিম লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসনে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশি নারী রুপা আশা হক। তিন মোট গণনাকৃত ভোটের ৪৬ দশমিক ৮ শতাংশ পেয়েছেন। লেবার পার্টির মনোনয়নে ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন রুপা আশা হক। এবারসহ টানা তিনবার তিনি লেবার পার্টির টিকিটেই জয়লাভ করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের অক্টোবরে লেবার পার্টির ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান রুপা হক। তাঁকে সর্বদলীয় সংসদীয় মিউজিক গ্রুপের ভাইস চেয়ার এবং ক্রসরেলের সর্বদলীয় সংসদীয় পদে নিযুক্ত করা হয়েছিল।
অন্যদিকে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপও এ নিয়ে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন। হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
এদিকে, পূর্ব লন্ডনের পপলার অ্যান্ড লাইমহাউস আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়নে এবারের নির্বাচনেও জয়লাভ করেছেন আফসানা বেগম। ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন আফসানা বেগম। ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন এমপি আফসানা বেগম।
লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকায় আফসানার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। বাংলাদেশে তাদের আদি বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে। তার বাবা মনির উদ্দিন টাওয়ার হ্যামলেটসের সিভিক মেয়র ছিলেন। তিনি ছিলেন জগন্নাথপুর পৌরসভার লুদুরপুর এলাকার বাসিন্দা। আফসানা লেবার পার্টির লন্ডন রিজিয়ন শাখার সদস্য। দলটির টাওয়ার হ্যামলেটস শাখার সহসভাপতিরও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তিনি টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের আবাসন বিভাগে কর্মরত।
এবারের নির্বাচনে লেবার পার্টি মোট ৮ ব্রিটিশ বাংলাদেশিকে মনোনয়ন দেয়। এই চারজন ছাড়া বাকিরা নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারেননি। প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থীর কাছে হেরেছেন গর্ডন অ্যান্ড বোচান আসনে লেবার পার্টির মনোনয়ন পাওয়া নুরুল হক আলী, ব্রিগ অ্যান্ড ইমিংহাম থেকে নাজমুল হোসাইন, উইথহামের রুমী চৌধুরি আর নর্থাম্পটনশায়ার সাউথের রুফিয়া আশরাফ।