ভারত গমনাগমনকারী পাসপোর্টযাত্রী হয়রানি বন্ধে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ফলে পাসপোর্ট যাত্রী ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে ইমিগ্রেশনের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) দেখা গেছে, বেনাপোল চেকপোস্টে বহিরাগত প্রবেশের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে পুলিশ। ইমিগ্রেশনকে দালালমুক্ত করতে প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক স্ক্যানিং মেশিন ও সিসি ক্যামেরা। এছাড়া সশস্ত্র আনসার ও আমর্ড পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে বহিরাগতদের।
জানা গেছে, বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট কাস্টমস দিয়ে গেল ৩ মাসে ৪ লাখ ৫০ হাজার যাত্রী ভারতে যাতায়াত করেছেন। যাত্রীদের কাছ থেকে এ সময় বিদেশে ভ্রমণকর বাবদ রাজস্ব আদায় করেছে প্রায় ৪২ কেটি টাকা। শিশু, প্রতিবন্ধী ও ক্যানসার রোগীরা (ভ্রমণকর মওকুফ) এই আওতার বাইরে রয়েছে।
যাত্রী টার্মিনালের প্রধান ফটকে বন্দরের নিরাপত্তাকর্মী, আনসার সদস্য, আমর্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখায় প্রবেশ করতে পারছে না বহিরাগত দালালরা। ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাদের সেবার মান বৃদ্ধি করায় যাত্রীরা দ্রুত ও সুশৃঙ্খলভাবে সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পারছেন নিজেরাই।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে একশ্রেণির দালাল দূরদূরান্ত থেকে আসা পাসপোর্ট যাত্রীদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছিল। সিরিয়াল ছাড়া তাদের পাসপোর্টের কাজ তাড়াতাড়ি করে দেওয়ার নাম করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি।
পাসপোর্ট যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য বেনাপোল চেকপোস্ট পুলিশ ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ ভূঞা এবং পুলিশ পরিদর্শক ইব্রাহিম ইমিগ্রেশনকে দালালমুক্ত ঘোষণা করেছেন। যাত্রীদের সেবার মান উন্নত করতে চেকপোস্ট প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল এবং ইমিগ্রেশনের ভেতরে ও কাস্টমস বহিরাগত দালাল উৎখাতে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। যাতে টার্মিনাল এলাকায় বহিরাগত কোনো দালাল ঢুকতে না পারে, সেজন্য প্রতিনিয়ত তদারকি করা হচ্ছে।
ওসি ইমতিয়াজ ভূঞা বলেন, বর্তমানে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার যাত্রী যাতায়াত করছেন। যাত্রীদের সেবার মান বাড়াতে ইমিগ্রেশনে সেবার মান বৃদ্ধি করা হয়েছে। যাত্রীরা নিজেরা ঝামেলামুক্তভাবে সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে কাজ সেরে নিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, এখন থেকে যাত্রীরা যাতে সহজে ভারত যাতায়াত করতে পারেন সেজন্য বহিরাগত প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে যাত্রীরা নিজেরা সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে তাদের পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে নিচ্ছেন। পাশাপাশি দেশ থেকে যেন কোনো অপরাধী পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য সার্বক্ষণিক ইমিগ্রেশন অফিসার ও বিজিবি সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। জুলাই-আগস্টের ঘটনায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড এবং হত্যা মামলার সঙ্গে জড়িত ৭ জন আসামি আটক করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।