করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে যশোর পৌরসভার ৩ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডে জনসাধারণের চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। শনিবার (৫ জুন) সকাল থেকে পৌরসভার দুটি ওয়ার্ডে সরকারি বিধিনিষেধ কঠোরভাবে প্রতিপালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শনিবার রাতে যশোরে করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। যশোরে করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান রাতে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সভায় যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন, যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামানসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান জানান, জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় যশোর পৌরসভার ৩ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সরকারি বিধিনিষেধ কঠোরভাবে প্রতিপালনে সীমিত পরিসরে জনসাধারণ চলাচল করতে পারবে। বিনা প্রয়োজনে এই দুই ওয়ার্ডের লোকজন ঘরের বাইরে যেতে পারবে না। এ লক্ষ্যে স্থানীয় প্রশাসন সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করবে। জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে৷ পুলিশ সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করবে৷ আইন অমান্যকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
তিনি জানান, পৌরসভার ৩ নম্বর ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা (৫ জুন পর্যন্ত) ৩৩ জন করে। সে কারণে ৩ নম্বর ওয়ার্ডকে ৮টি পয়েন্টে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে দুইটি পয়েন্ট দিয়ে জনসাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে পারবে। অপরদিকে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ১৫টি পয়েন্টের মধ্যে ৭টি পয়েন্ট দিয়ে চলাচল করতে পারবে। বাকি পয়েন্টগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হবে। এছাড়া যশোর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা ২১ এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ২২ জন। এই এলাকা দুটি কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে বলে তিনি জানান। যশোর ছাড়াও অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভার ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ১৮ ও ১১ জন। উপজেলা প্রশাসন ওই দুটি ওয়ার্ডে বিধিনিষেধ কার্যকর করতে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
অপরদিকে ঝিকরগাছা উপজেলার ৪ নম্বর গদখালী ইউনিয়নে আক্রান্তের সংখ্যা ১১ জন। এই ইউনিয়নে আক্রান্তদের বাড়ি চিহ্নিত করে কঠোরতা অবলম্বনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলায় করোনার সংক্রমণ একটু বৃদ্ধি পেয়েছে ঠিক; কিন্তু তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে নয়। করোনা নিয়ন্ত্রণে যেসব স্বাস্থ্যবিধি আরোপিত আছে, তা আরও কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে এবং জনসচেতনতায় আরও বেশি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এটিকে লকডাউন বলছি না। সরকারি বিধিনিষেধ কঠোরভাবে প্রতিপালন করা হবে বলা হচ্ছে। এখনই নয়, পরিস্থিতি আরও পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনে লকডাউনের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।