মৌসুমে চালের দামের ঊর্ধ্বগতি রোধে বাজার দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার (৩০ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
বৈঠকে আলোচ্যসূচির বাইরে আলোচনা বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আজ মূলত মার্কেট মেকানিজম নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ছিলেন। এখন ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে কীভাবে পেমেন্টগুলো এনশিওর করতে পারবো, সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, বিশেষ করে চাল ও তেল নিয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে। এই ভরা মৌসুমে চালের দাম কেন বেশি? গোয়েন্দা প্রতিবেদন এবং কিছু সাজেশন ছিল, এগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
‘আমাদের মার্কেট সার্ভে করে ইমিডিয়েটলি একটা অ্যাকশনে (বাজার জরিপ করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে) যেতে বলা হয়েছে। কেন চালের দাম বাড়বে? তাই কোথায় কে চাল মজুত করে এবং আমাদের কিছু ইনফরমেশন আছে যে, আমি যে ইন্ডাস্ট্রিটা করবো বা যে প্রোডাকশনে যাবো, আমার তো মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন আছে। মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশনে তো বলা আছে, আমি কী করতে পারবো?’
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমাদের মনে হচ্ছে, এমন হতে পারে- কেউ কেউ হয়তো মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন ভেঙে চালের ব্যবসায় নেমে গেছে। এজন্য বাজার শক্তভাবে মনিটর ও সুপারভিশন করে যদি কেউ এভাবে গিয়ে থাকে…আবার ধরেন বড় একটা কোম্পানি হাজার হাজার কোটি টাকা আছে, আমি মার্কেটে নেমে এসে ধান ও চাল কিনে ফেললাম, মজুত করলাম। এগুলো আমি কতদিন রাখতে পারবো। এগুলো সুপারভিশন করে কুইকলি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, খাদ্যমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, খাদ্য সচিব, বাণিজ্য সচিব ও কৃষি সচিবকে দ্রুত বসে মার্কেট সার্ভে করে, এ বিষয়গুলো দেখতে বলা হয়েছে। ভরা মৌসুমে কেন চালের দাম এত বেশি থাকবে?
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কিছুদিন আগে তেলের বিপরীতে যেভাবে ড্রাইভ দেওয়া হলো, ওই রকম ড্রাইভ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদি কেউ এভাবে আন-অথরাইজড চালের ব্যবসা করে বা মজুত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আজ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
‘আর একটা জিনিস বলা হয়েছে, বেশিরভাগ দেশেই মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন স্পেসিফিক একটা বিষয়ের ওপর থাকে। কিন্তু আমাদের এখানে দেখা যাচ্ছে, একটা মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে অনেকগুলো ঢুকিয়ে দেয়। তাই এটাও শক্তভাবে দেখতে বলা হয়েছে। কার মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন ও আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশনে কি আছে? সে কি পণ্যের উৎপাদন বা ব্যবসা করবে এবং এর বাইরে যাচ্ছে কি না। প্রয়োজন হলে তাকে সতর্ক করা যেতে পারে।’
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা অন্যান্য দেশ থেকে দ্রুত তথ্যটা নেবে, তারা যে মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন এবং আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশন দেয়, সেটা আইটেম বা বিজনেস ওরিয়েন্টেড কি না। সেই বিজনেসের বাইরে সে অন্যটা করতে পারে কি না। উন্নত দেশে একটির মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন দিয়ে আরেক ব্যবসা করা যায় না। এটা হয়তো তারা জানেও না, সেটাও হতে পারে।’