মেহেরপুরের মুজিবনগরে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নানের সমর্থকদের সঙ্গে নৌকা প্রতীকে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ৪৫ জন
সোমবার (৮ জানুয়ারি) রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত উপজেলার আনন্দবাস গ্রামে দফায় দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নৌকার পক্ষের আহতরা হলেন- আনন্দবাস গ্রাম আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাগোয়ান ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ফেরদৌস হোসেন (৬০), আনন্দবাস গ্রামের আলমাজুল ইসলামের ছেলে আশিক (২৪), মৃত উসমান আলীর ছেলে আয়াত আলী (৫৫), আলতাব হোসেনের ছেলে অন্তর (১৮), জিহুত মোল্লার ছেলে আশরাফুল ইসলাম (৪০), বাগোয়ান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আয়ূব হোসেনের ছেলে নাহিদ হোসেন (৩৪), ওয়াজ করণীর ছেলে পিয়াস হোসেন (২৫), সিরাজুল ইসলামের ছেলে হাসিবুল ইসলাম (১৪), ইসমাইল হোসেনের ছেলে রাশিদুল ইসলাম (১৮), খোদা বিশ্বাসের ছেলে টুকু বিশ্বাস (৫০), ফজলু মোল্লার ছেলে আব্দুল হালিম (৩২), পটল মোল্লার ছেলে মাসুম হোসেন (
স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নানের পক্ষের আহতরা হলেন- ওই এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে আশিক (২৪), ময়না বিশ্বাসের ছেলে রানা হামিদ (২১), মৃত কামরেজ মিয়ার ছিল শফিকুল মিয়া (৪৫), আলাউদ্দিনের ছেলে আজিজুল ইসলাম (৩২)।
আহতদের মধ্যে ফেরদৌস হোসেন, আব্দুল হালিম, হাসিবুল ইসলাম ও আশিকুর রহমানকে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে মোল্লা মেম্বারের অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ওই এলাকার পটল সিয়ার ছেলে শহিদুল ইসলাম (৩৭) নামের আহত এক পথচারীকে প্রথমে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা বিভিন্ন স্থানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক, আনন্দবাস গ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়ূব হোসেন ও নৌকার কর্মী ইমরান হোসেন বলেন, নৌকার প্রার্থী ফরহাদ হোসেন তৃতীয়বারের মতো জয়লাভ করায় ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য ফেরদৌস হোসেন ওরফে মোল্লার নেতৃত্বে সোমবার রাত ৮টার দিকে আনন্দবাস বাজার থেকে একটি আনন্দ র্যালি বের করা হয়। আনন্দ র্যালিটি আনন্দবাস গ্রামের উত্তরপাড়ার দিকে যাওয়ার সময় মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়া উদ্দিন বিশ্বাসের বাড়ির সামনে পৌঁছে। এ সময় কয়েকজন নৌকার কর্মী-সমর্থক বাড়ির সামনে গিয়ে নাচানাচি করলে জিয়া উদ্দিন বিশ্বাস বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বিষয়টি সংঘর্ষে গড়ায়। এতে আমাদের পক্ষের প্রায় ৪০ জন আহত হন।
এ বিষয়ে জানতে মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়া উদ্দিন বিশ্বাসের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাব।
পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নানসহ কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কেউ ফোন রিসিভ করেননি।
মুজিবনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জ্বল দত্ত ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ শটগানের ৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। পরবর্তীতে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে না ঘটে সে লক্ষ্যে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। মামলা হলে আইনানুগ পদক্ষেপ
নেওয়া হবে।