আগামী বৃহস্পতিবার (২২ জুন) শেষ হচ্ছে চলতি বছরের হজের ফ্লাইট। হাতে আছে মাত্র তিন দিন। অথচ এখনো সৌদি যেতে পারেননি ২৫ হাজার ৬৩৯ জন হজযাত্রী। এর মধ্যে ৬ হাজার ৫০০ জন যাত্রীর হজযাত্রা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। কারণ শিডিউলড ফ্লাইটে তাদের যাত্রা নিশ্চিত করা যায়নি। এ জন্য আরও ১০টি অতিরিক্ত ফ্লাইটের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। শেষ সময়ে অনুমতি পাওয়া না গেলে এ সাড়ে ৬ হাজার হজযাত্রীর যাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তবে বুধবারের মধ্যে অতিরিক্ত ফ্লাইটের অনুমিত মিলবে বলে জানিয়েছে হজ অফিস।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ শাখার কর্মকর্তারা জানান, বাতিল হওয়ার ফ্লাইটের কারণে হজযাত্রীদের বহন করতে অতিরিক্ত ১০টি ফ্লাইটের স্লটের জন্য সৌদি সিভিল এভিয়েশনের (জিএসিএ) কাছে আবেদন করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। যদিও আজ (সোমবার) বিকেল পর্যন্ত এ স্লটের অনুমিত মেলেনি।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ-সৌদি সরকারের কূটনৈতিক পর্যায়ে যোগাযোগ চলছে বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। শেষ পর্যন্ত অনুমতি না মিললে বাতিল হওয়া ফ্লাইটের হজযাত্রীদের বাণিজ্যিক ফ্লাইটে হলেও পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন হজ শাখার কর্মকর্তারা।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, অতিরিক্ত যে ১০টি ফ্লাইটের অনুমতি চাওয়া হয়েছে সেটা দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন হয় সে জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সৌদি সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সম্প্রতি সৌদির হজ ও ওমরাবিষয়ক উপমন্ত্রী আব্দুল ফাত্তাহ সুলাইমান মাশাতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে ১০টি ফ্লাইট চালানোর অনুমতি চেয়েছেন সৌদিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
সোমবার বিকেল পর্যন্ত ১ লাখ ২২হাজার ৫৫৬ জন হজযাত্রীর মধ্যে ভিসা পেয়েছেন ১ হাজার ২১ হাজার ৭১৫জন। এখনো ভিসা পাননি ৮৪১ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনা শতভাগ হজযাত্রীর ভিসা পেয়েছেন। বেসরকারি পর্যায়ে ভিসার হার ৯৯ শতাংশ। ভিসা পাওয়া বাকিদের মধ্যে দুটি এজেন্সির প্রতারণার কারণে ৫৮৩ জন হজযাত্রীর ভিসা এখনও হয়নি। বাকি হজযাত্রীদের ভিসা মঙ্গলবারের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হাব।
ঢাকার হজ অফিস (আশকোনা) জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ২৩টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ১৮টি ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের পাঁচটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। অনেক ফ্লাইট গেছে বেশ কিছু আসন খালি রেখে। প্রথম দিনই ১৪০ আসন খালি রেখে বিমান যাত্রা করেছিল।
গত রোববার ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, বাতিল হওয়া ফ্লাইটগুলোর জন্য শিগগিরই নতুন শিডিউল পাব। প্রত্যেক হজযাত্রী হজে যেতে পারবেন। কোনো হজযাত্রী না যাওয়া পর্যন্ত ধর্ম মন্ত্রণালয় ফ্লাইট অনুমিতর জন্য চেষ্টা করবে।
ঢাকার আশকোনা হজ ক্যাম্পের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সৌদি সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। তারা হয়ত কাল পরশুর মধ্যে নতুন ফ্লাইটের স্লট দেবে।
তিনি জানান, আর অতিরিক্ত ৮-৯ ফ্লাইট পেলে সব হজযাত্রীকে সৌদি আরবে নেওয়া সম্ভব হবে। যাদের ভিসা হয়নি, তাদের ভিসা করার জন্য সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
সৌদি পৌঁছেছেন ৯৬ হাজার ৯১৯ হজযাত্রী
সোমবার (১৯ জুন) রাত ২টা পর্যন্ত ৯৬ হাজার ৯১৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯ হাজার ৭৯৮ ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ৮৭ হাজার ১২১ জন। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২১ হাজার ৭১৫টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।
হজ সম্পর্কিত সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এই সময় পর্যন্ত ইস্যুকৃত ভিসা ১ লাখ ২১ হাজার ৭১৫টি; সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ভিসা শতভাগ, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ভিসা ৯৯ শতাংশ।