জ্বালানি তেলের উৎপাদন ও রপ্তানিকারী দেশগুলো দৈনিক উত্তোলন হ্রাস করার পদক্ষেপ নেওয়ার পর তেলের বাজারে ফের স্থিতিশীলতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দামও বেড়েছে প্রায় ৬ শতাংশ।
একই দিন আন্তর্জাতিক বাজারে কমেছে স্বর্ণের দামও। সোমবার প্রতি আউন্স (২৮ দশমিক ৩৫ গ্রাম) স্বর্ণের দাম দশমিক ২ শতাংশ কমে হয়েছে ১ হাজার ৯৮০ দশমিক ৬৯ ডলার।
কিন্তু তেলের বাজারে স্থিতিশীলতা ও স্বর্ণের দাম কমা সত্ত্বেও মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। এই আশঙ্কার প্রধান কারণ— দেশটির শিল্পোৎপাদন হ্রাস পেতে থাকা।
জ্বালানি তেল এবং স্বর্ণ— উভয় পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার প্রায় পুরোপুরি ডলারনির্ভর। এতদিন তেলের বাজারে মন্দাভাব থাকায় উপকৃত হচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প কারখানগুলো। আবার স্বর্ণের বাজারের স্থিতিশীলতাও দেশটির মূল্যস্ফীতি রোধে প্রায় দেওয়ালের মতো দাঁড়িয়েছিল।
কিন্তু তেলের বাজার যদি চাঙা হয়, সেক্ষেত্রে শিল্পোৎপাদনের জন্য তেল ক্রয় বাবদ আরও বেশি ডলার ব্যয় করতে হবে মার্কিন উদ্যোক্তাদের। এদিকে, ডলারের মান স্থির রাখতে গত বছরের শেষ দিকে মার্কিন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ঋণের বিপরীতে সুদের হার বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছিল দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম।
ফলে উদ্যোক্তাদের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে এবং এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তারা।
এদিকে অনেক মার্কিন অর্থনীতিবিদদের শঙ্কা— চলতি বছরের মে মাসের মদ্যে ব্যাংক ঋণের বিপরীতে সুদের হার ৫৫ শতাংশেরও বেশি করার পরিকল্পনা নিচ্ছে ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা অবশ্য বলেছেন, তারা সবসময় সুদের হার ‘যৌক্তিক পর্যায়ে’ রাখার পক্ষে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি বিশ্লেষণকারী অন্যতম সংস্থা ম্যারেক্সের ধাতব পণ্যের বাজার বিশ্লেষক এডওয়ার্ড মেয়ার রয়টার্সের কাছে স্বীকার করেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চলতি বছরের প্রথম তিন মাস স্বর্ণের উচ্চমূল্য বেশ সহায়ক ছিল।
‘স্বর্ণের দাম কমে যাওয়ায় ডলারের মান কিছু কমেছে— এটা সত্য। তবে এটা বেশিদিন স্থায়ী হবে বলে আমার মনে হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে ডলার আবার তার পূর্বমানে ফিরে যাবে,’ রয়টার্সকে বলেন এডওয়ার্ড মেয়ার।