প্রয়াত জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহকে ভালোবেসে নায়কের সবচেয়ে সুপারহিট সিনেমা ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ নামে কয়েক বছর আগে একটি শুটিং স্পট নির্মাণ করেন ভক্ত ও চলচ্চিত্র প্রযোজক মো. রাশেদুল ইসলাম রাশেদ। নিয়মিত সেখানে নাটক-সিনেমার শুটিং হয়। সেই সালমান শাহ ভক্ত-প্রযোজক রাশেদকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচল এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে এই প্রযোজক ও ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন রাশেদ নিজেই।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করি। সেই মামলা তুলে না নেওয়ায় এই অপরহণ করা হয়। মামলা তুলে নিতে দীর্ঘদিন চাপ সৃষ্টি করে আসছিল এই চক্রটি। মামলাটি তুলে না নেওয়ায় শুক্রবার (২৭ জুন) দুপুরে পূর্বাচল ১৩ নম্বর সেক্টরের অফিস থেকে আমাকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের পর আমার পরিবারের কাছে ৭০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা।
রাশেদের ভাষ্য অনুযায়ী, রাসেল আহমেদের নেতৃত্বে ৮-১০ জন যুবক দুপুর আড়াইটার দিকে অফিসে ঢুকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। অভিযুক্ত রাসেল ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে আমার চাচাতো ভাই রাকিবের মেয়ে সুবর্ণাকে অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা রয়েছে। সেই মামলাটি এখন তুলে নেওয়ার জন্য তাদের ওপর দীর্ঘদিন ধরেই হুমকি দিয়ে আসছিল অভিযুক্ত চক্র।
জানা যায়, অপহরণের খবর পেয়ে রাশেদের পরিবার দ্রুত পূর্বাচল সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ জানায়। এতে অপহরণকারীরা চাপে পড়ে যায় এবং রাশেদকে ‘আওয়ামী লীগ কর্মী’ পরিচয়ে রূপগঞ্জ থানায় সোপর্দ করার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ উভয় পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়।
রূপগঞ্জ থানা ওসি তরিকুল ইসলাম জানায়, এ ঘটনায় অভিযুক্ত রাসেল মিয়াসহ চক্রের ছয় সদস্য—রাসেল, শান্ত, রনি, শিপলু সাব্বির ও রনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপহৃত রাশেদকেও উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেহেদী ইসলাম বলেন, তাকে আওয়ামী লীগ কর্মী হিসেবে থানায় সোপর্দ করার চেষ্টা করা হলেও এখন পর্যন্ত তার সে রকম কোনো রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রমাণ আমরা পাইনি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রাশেদ ‘নিশ্চুপ ভালোবাসা’ নামের একটি সিনেমা প্রযোজনা করেছেন। পাশাপাশি বেশকিছু নাটক, সিনেমা এবং মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করেছেন। এ ঘটনায় চলচ্চিত্রপাড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।