নির্যাতনের মুখে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিজভূমে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এই তথ্য দেন তিনি। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরানোর বিষয়ে প্রচেষ্টার অগ্রগতি জানতে চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত নির্দিষ্টভাবে কোনো সুখবর দিতে না পারলেও মিয়ানমারের বর্তমান সরকার প্রত্যাবাসনে রাজি। কিন্তু প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দিতে পারেনি। এমনকি নির্দিষ্ট তারিখও বলতে পারেননি চীনের রাষ্ট্রদূত।
আবদুল মোমেন বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের সরকার ওখানকার দলিল চায়। সেটা একটা সমস্যা। অনেকের কাছেই ডকুমেন্ট নেই। বাংলাদেশ দলিলের জটিলতায় যেতে চায় না। নিতে হলে সবাইকেই নিতে হবে।
তিনি বলেন, বর্ডারের জিরো লাইনে ৫ হাজার রোহিঙ্গা আছে। চীনকে বলেছি তাদের মিয়ানমারের ভিতরে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিতে। তবে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেনি চীনা রাষ্ট্রদূত।
আবদুল মোমেনের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং চীনা দূতাবাসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মিয়ানমারের আশ্বাস দিলেও গত পাঁচ বছরে একজনক রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি দেশটি। বাংলাদেশ কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে।
চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ত্রিপক্ষীয় প্রক্রিয়ার অধীনে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য একটি চুক্তি সই করে, কিন্তু প্রক্রিয়াটি স্থবির হয়ে আছে।
বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় প্রক্রিয়ার ধারণাটি নিয়ে চার বছর আগে নিউইয়র্কে কয়েকটি বৈঠক হয়েছিল। সেখানে দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য পদক্ষেপ নিতে পটভূমির পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা হয়েছিল।
সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত জিমিং ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তারা মিয়ানমারের পক্ষের সঙ্গে যেসব কথা বলেছেন তার ভিত্তিতে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ফলাফল’ তুলে ধরবেন। সেই অনুযায়ী আজকের বৈঠক হয়। সেখানে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে মিয়ারমারের সম্মত হওয়ার বিষয়টি জানান তিনি।