মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ কাচিনের হাপাকান্ত শহরে প্রবল বর্ষণ এবং তার ফলে সৃষ্ট হড়কা বান ও ভূমিধসে একটি জেড পাথরের খনির অন্তত ২৫ জন শ্রমিক ভেসে গেছেন। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
মিয়ানমারের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎরতা শুরু করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উদ্ধারকর্মী এএফপিকে বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে হাপাকান্তে। সোমবার সকালে হড়কা বানের সময় খনির একটি অংশ হঠাৎ ১৫০ থেকে ১৮০ মিটার (৫০০ থেকে ৬০০ ফুট) নিচে ধসে পড়ে। এতে অন্তত ২৫ জন খনি শ্রমিক নিহত হয়েছেন।’
‘আপাতত আমরা এর বেশি কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। শ্রমিকদের কোনো নাম-পরিচয় আমরা পাইনি। তাদের কারো মরদেহও এখন পর্যন্ত উদ্ধার করতে পারিনি।’
আরেকজন উদ্ধারকর্মী জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে এখনও বৃষ্টি ঝরছে এবং আরও একটি ভূমিধসের আশঙ্কা সত্ত্বেও নিখোঁজ শ্রমিকদের অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
‘তবে আমরা বেশিক্ষণ অনুসন্ধান চালাতে পারব না, কারণ এই এলাকাটি এখনও খুবই ঝুঁকিপূর্ণ,’ এএফপিকে বলেন এই উদ্ধারকর্মী।
মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চালীয় প্রদেশগুলো প্রাকৃতিক সম্পদে খুবই সমৃদ্ধ। স্বর্ণ ও মূল্যবান পাথরের বেশ কয়েকটি খনি ও দামি কাঠ রয়েছে এখানকার অরণ্যগুলোতে। কিন্তু এই সম্পদের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ কার্যত প্রায় নেই। খনিজ ও বনজ সম্পদ আহরণে প্রায় কোনো সরকারি নির্দেশনা মানা হয় না।
ক্ষমতাসীন জান্তা এবং জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর আয়ের বড় একটি উৎস কাচিন ও অন্যান্য উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোর খনিজ ও বনজ সম্পদ বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ। খনি ও অরণ্যের দখল নিয়ে সরকারি ও জান্তাবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে প্রায়ই সংঘাত বাঁধে।
খনি এলাকাগুলোতে বর্ষকালে কার্যক্রম ও আকরিক উত্তোলনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে মিয়ানমারে। কিন্তু অধিকাংশক্ষেত্রে সেই নির্দেশনা মানা হয় না। ফলে প্রতি বছরই বর্ষকালে খনি দুর্ঘটনায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রাণহানি ঘটে। ২০২০ সালে হড়কা বান ও ভূমিধসে মিয়ানমারের কয়েকটি খনির শতাধিক শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছিলেন। তাদের কেউই আর জীবিত অবস্থায় ফিরে আসেননি।