আন্তর্জাতিক দুই থিঙ্কট্যাংক সংস্থা স্পেশাল অ্যাডভাইসরি কাউন্সিল ফর মিয়ানমার (স্যাক-এম) অ্যাড এবং ক্রাইসিস গ্রুপের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানা গেছে এই তথ্য।
স্যাক-এমের প্রতিবদেনে বলা হয়েছে, বর্তমানের মিয়ানমারের ৮৬ শতাংশ শহর-গ্রামে জান্তার কোনো কার্যকর নিয়ন্ত্রণ নেই। মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যার ৬৭ শতাংশ বসবাস করে এসব শহর-গ্রামে।
বৃহস্পতিবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্যাক-এমের গবেষয়করা বলেন, ‘শাসক হিসেবে ন্যূনতম যেসব দায়িত্ব পালন করা উচিত, মিয়ানমারের অধিকাংশ এলাকায় সেসবও পালন করতে পারছে না জান্তা। দেশটির অনেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা এলাকা এখন বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে এবং এর ফেলে ব্যাপক চাপে পড়া জান্তাগোষ্ঠী এখন আক্রমণাত্মক অবস্থান ছেড়ে রক্ষণাত্মক ভূমিকা নিতে বাধ্য হচ্ছে।’
এদিকে ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গত আট মাসে অধিকাংশ সংঘাতে বিজয় মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে আরও সংগঠিত হয়েছে। এমনকি মিয়ানমার-থাইল্যান্ড এবং মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তও এখন তাদের দখলে।’
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারে রাজনৈতিক অস্থিরতার শুরু ২০২২ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে। ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচি এবং তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমেক্রেসির হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে কারা অন্তরীণ করে জান্তা, সেই সঙ্গে গনতন্ত্রকামী জনগণের শান্তিপূর্ন বিক্ষোভ-আন্দোলনও নির্মমভাবে দমন করে। মূলত তার পর থেকেই মিয়ানমারের রাজনীতিতে উত্থান ঘটতে থাকে জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর।
গত বছর অক্টোবরে জান্তাবিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ঐক্যবদ্ধভঅবে মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশ ও শহরের দখল নিতে যুদ্ধ শুরু করে। গত প্রায় আট মাস ধরে চলমান এই যুদ্ধে দেশের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্রোহীরা বিজয়ী হয়েছে এবং তাদের এই ধারা এখনও অব্যাহত রয়েছে বলে নিজেদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে ক্রাইসিস গ্রুপ।
বিদ্রোহীদের একের পর এক বিজয় রাজধানী নেইপিদোর অভিজাতদের মধ্যে হতাশা বাড়িয়ে তুলছে এবং মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইংয়ের ভবিষ্যৎকেও প্রশ্নের মুখে ফেলেছে মন্তব্য করা হয়েছে ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিবেদনে।
‘শিগগিরই হয়তো তার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা নেই, কিন্তু যদি তাকে উচ্ছেদে বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়, তাহলে তা ঠেকানোর সাধ্যও তার নেই,’ বিবৃতিতে বলেছে ক্রাইসিস গ্রুপ।
এই প্রতিবেদনের ব্যাপারে মন্তব্য চেয়ে জান্তা মুখপাত্রদের সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। কিন্তু কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।