কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের অদূরে ১৮ জন জেলেসহ বাংলাদেশি চারটি নৌকা ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি)।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) বিকেলে নৌকাসহ ধরে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশিদের বুধবার (১৬ মার্চ) রাত ৮টা পর্যন্ত ফেরত দেয়নি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। তবে প্রশাসন এখনো আনুষ্ঠানিক কিছুই জানে না বলে জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং টেকনাফ বিজিবি অধিনায়ক।
ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেরা হলেন-টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ার মো. জসিম (২৫), একই এলাকার সাইফুল ইসলাম (২৩), মো. ফয়সাল (২৩), আবু তাহের (২২), মো. ইসমাইল (২০), মো. ইসহাক (২৪), আব্দুর রহমান (২৪), নুর কালাম (২৬), মো. হোসেন (২২), হাসমত (২৫), মো. আকবর (২৩), নজিম উল্লাহ (১৯), রফিক (২০), সাব্বির (২৫), মো. হেলাল (২৫), রেজাউল করিম (১৮), রমজান (১৬) ও জামাল (২১)।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আবদুস সালাম বলেন, ‘ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেদের সবাই আমার এলাকার বাসিন্দা। সাগরে মাছ শিকার শেষে তারা ফিরছিলেন। পথে ডুবে যাওয়া একটি কাঠবোঝাই ট্রলারের উদ্ধারকাজে অংশ নেন তারা। তারা কিছু কাঠও উদ্ধার করেন। পরে ফেরার পথে চারটি নৌকাসহ ১৮ জেলেকে ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও বিজিবিকে জানানো হয়েছে।’
ধরে নিয়ে যাওয়া জেলে হেলালের ভাই মো. আয়াছ বলেন, ‘ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেদের মধ্যে আমার আপন ভাই হেলালও রয়েছেন।’
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা মো. জসিম, নুর কালাম, মো. ইসলাম ও নুর কালামের মালিকাধীন চারটি নৌকায় ১৮ জন জেলে সাগরে মাছ শিকারে যান। তারা মাছ শিকার শেষে ফিরছিলেন। পথে মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে শাহপরীর দ্বীপের কাছাকাছি নাইক্ষ্যংদিয়ার এলাকায় কাঠবোঝাই ট্রলারটি দেখতে পান। এসময় জেলেরা ডুবে যাওয়া ট্রলারের উদ্ধার কাজে অংশ নেন। তারা ফিরে আসার সময় মিয়ানমার বিজিপি স্পিডবোটে এসে তাদের ধাওয়া করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ধরে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে টেকনাফ ইউএনও পারভেজ চৌধুরী বলেন, নৌকাসহ ১৮ বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। তবে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ লিখিত দেননি। এ ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, সাগর থেকে ১৮ জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নানাভাবে প্রচার পেয়েছে। তবে আমরা আনুষ্ঠানিক কারো অভিযোগ পাইনি। এরপরও তাদেরকে মিয়ানমারের বিজিপি নিয়ে গেছে নাকি জলদস্যুরা নিয়ে গেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।