মিয়ানমারে চলমান অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভে সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন গেল। জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে রোববার (১৪ মার্চ) ৩৯ জন নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে শিল্প এলাকা বলে পরিচিত হ্লাইংথায়ায় ২২ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
এর আগে ৩ মার্চ দেশটিতে সবচেয়ে বেশি ২৮ জন নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছিলেন। অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের বরাতে রয়টার্স জানায়, হ্লাইংথায়ায় চীনা অর্থায়নে পরিচালিত একটি কারখানায় আগুন দেওয়ার পর এ ঘটনা ঘটে। এছাড়াও দেশটির অন্যান্য শহরে আরো ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ দিন একজন পুলিশও মারা গেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ফটো সাংবাদিক বলছিলেন, এটা খুবই ভয়াবহ ছিল। আমার চোখের সামনে মানুষদের গুলি করা হয়েছিল। এই স্মৃতি কখনও ভুলতে পারব না। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ঘোষণা করেছে যে মিয়ানমারের বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনের একটি জেলা ও হ্লাইংথায়ায় সামরিক আইন জারি করা হয়েছে।
সেনা পরিচালিত মায়াওয়াদ্দে টেলিভিশন জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা চারটি গার্মেন্টস ও একটি সার কারখানা জ্বালিয়ে দেয়। খবর পেয়ে নিরাপত্তা বাহিনী পদক্ষেপ নিতে গেলে প্রায় দুই হাজার লোক তাদের আগুনের কাছে যাওয়ার পথ আটকে দিয়েছিল। এরপর পুলিশ এলোপাথাড়ি গুলি চালায়।
রয়টার্স থেকে জান্তার একজন মুখপাত্রের কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ফোন করা হলে তিনি কোনো জবাব দেননি। সেনাবাহিনী কর্তৃক ক্ষমতাচ্যুত ওই এলাকার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ডা. সাসা জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন। এক বার্তায় তিনি বলেন, এই রক্তপাতের জন্য অশুভ স্টেট অ্যাডমিস্টাটিভ কাউন্সিল (এসএসি) দায়বদ্ধ। তাদেরকে এর জাবাদিহি করতে হবে।
দেশটির গণমাধ্যম ইরাবতি জানায়, এর ফলে মোট নিহত বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা ১৩৪ এ পৌঁছেছে। ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। দেশটির নেত্রী অং সান সু চিসহ শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতিকদের বন্দী করা হয়। এর কয়েকদিন পরই জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। শুরুতে শান্তিপূর্ণ থাকলেও ধীরে ধীরে তা রক্তক্ষয়ী সহিংসতায় রূপ নেয়।