মালয়েশিয়ার দুই প্রদেশের ২০টি ইসলামি দাতব্য আশ্রয়কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে ৪০২ জন শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক তরুণ-তরুণীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। নির্যাতনে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এসব প্রতিষ্ঠানের ১৭১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
বুধবার রাজধানী কুয়ালালামপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মালয়েশিয়া পুলিশের মহাপরিদর্শক রাজারউদ্দিন হুসাইন।
সংবাদ সম্মেলনে রাজারউদ্দিন বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চালানো হয়েছিল এই অভিযান। যেসব শিশু-অপ্রাপ্তবয়স্ককে উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের সবার বয়স এক থেকে ১৭ বছর। উদ্ধারদের মধ্যে ২০১ জন মেয়ে এবং এবং ২০১ জন ছেলে। এসব আশ্রয়কেন্দ্র থেকে যে ১৭১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের সবাই এই অপ্রাপ্তবয়স্কদের যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।
“ওই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর পরিবেশ ছিল এমন যে প্রথমে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বয়োজ্যেষ্ঠ অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েদের যৌন নির্যাতন কিংবা তাদের সঙ্গে জোরপূর্বক যৌনতায়ে মেতে উঠতেন। তারপর তাদেরকে অপেক্ষাকৃত কম বয়স্কদেরকে নির্যাতন করার নির্দেশ দিতেন,’ সংবাদ সম্মেলনে বলেন রাজারউদ্দিন।
এই দাতব্য সংস্থাগুলোকে অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনাগত সহায়তা প্রদান করত মালয়েশিয়াভিত্তিক বহুজাতিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ইখওয়ান সার্ভিসেস অ্যান্ড বিজনেস ((জিআইএসবি)। সুপারমার্কেট থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদন পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ রয়েছে এই কোম্পানির। মালয়েশিয়া ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মিসর, সৌদি আরব, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া এবং থাইল্যান্ডে জিআইএসবির শাখা রয়েছে।এদিকে, রাজারউদ্দিন হুসাইন কুয়ালালামপুরে সংবাদ সম্মেলন করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে একটি বিবৃতি দিয়েছে জিআইএসবি। সেই বিবৃতিতে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বলেছে, “এই দাতব্য আশ্রয়কেন্দ্রগুলো আমাদের অর্থায়নে পরিচালিত হলেও সেখানে যেসব জঘন্য ও আইনবিরোধী কার্যক্রম হতো— তা আমাদের জানা ছিল না। আমরা এ ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।”
জিআইএসবি বিবৃতি দেওয়ার পর কয়েকজন স্থানীয় সাংবাদিক যোগাযোগ করেছিলেন রাজারউদ্দন হুসাইনের সঙ্গে। তাদেরকে মালয়েশিয়া পুলিশের মহাপরিদর্শক জানান, তদন্ত ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।