নতুন করে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার প্রকল্প স্থগিত হওয়ায় নিজেদের কাছে থাকা দেড় লাখের মতো ইভিএম থেকে কতটি ঠিক করা যায় সেজন্য জোর চেষ্টা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এই মুহূর্তে ব্যবহারযোগ্য ইভিএমের সংখ্যা বলতে পারছে না সংস্থাটি। এজন্য অপেক্ষা করতে হবে আগামী মার্চ পর্যন্ত।
বুধবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ইভিএম প্রকল্পের পরিচালক কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
আগামী নির্বাচনে সর্বোচ্চ দেড়শতাধিক আসনে ইভিএমে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দার কারণে পরিকল্পনা কমিশন নতুন করে ইভিএম কিনতে ও ব্যবস্থাপনার জন্য ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প স্থগিত করেছে।
যে কারণে নিজেদের হাতে থাকা ইভিএম দিয়ে যে কয়টি আসনে ভোট করা যায় সেটা করতে চায় ইসি। তবে কতগুলো ইভিএম ঠিকঠাক আছে তা জানা নেই ইসির।
রাকিবুল হাসান বলেন, দেড় লাখ ইভিএমের মধ্যে ৭০ হাজার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিতে (বিএমটিএফ) সংরক্ষিত রয়েছে। ৮০ হাজার মেশিন মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন নির্বাচনে ব্যবহার হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে ৮০ হাজার ইভিএমের মধ্যে ৪০ হাজার হার্ড বক্সে পাঠানো হয়েছিল। বাকি ৪০ হাজার পাঠানো হয়েছিল কাগজের বক্সে, সেগুলো কোয়ালিটি চেকিং করা হচ্ছে।
তিনি জানান, বিএমটিএফে যে ৭০ হাজার মেশিন ছিল, সেগুলোর মধ্য থেকেও কিছু কিছু ব্যালট ইউনিট বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনে ব্যবহার করা হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় একটি কন্ট্রোল ইউনিটের বিপরীতে একাধিক ব্যালট ইউনিটের প্রয়োজন পড়েছে। এক্ষেত্রে সেই ৭০ হাজার মেশিনের সেট (কন্ট্রোল ইউনিট, ব্যালট ইউনিট প্রভৃতি) মেলাতে হবে।
সব মিলিয়ে ৩৫ শতাংশ কোয়ালিটি চেকিং (কিউসি) করা বাকি আছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিএমটিএফ কাজটি করছে। এক্ষেত্রে আগামী মার্চের মধ্যে জানা যাবে সংসদ নির্বাচনে কতটি মেশিন ব্যবহারযোগ্য। তাই এখন বলা সম্ভব নয়।
নতুন প্রকল্প স্থগিত হওয়ায় আমাদের হাতে থাকা দেড় লাখ ইভিএম দিয়ে কতটি মেশিন ঠিক করা যায় সেজন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো আসনে তিন লাখ ভোটার রয়েছে। আবার কোনো আসনে ১৯ লাখ ভোটার রয়েছে। কোথাও সেম নাম্বারে (ভোটার সংখ্যা) একটা আসন হয়, কোথাও পাঁচটা আসন হয়। আকাশ-পাতাল পার্থক্য আছে। তাই কোন আসন যে কমিশন দেবে সেটার ওপর নির্ভর করবে কতটি আসনে ইভিএম ব্যবহার করা যাবে।
নির্বাচন কমিশন বলছে, হাতে থাকা ইভিএম দিয়ে ৫০ থেকে ৭০টি আসনে ভোট করা সম্ভব হতে পারে। তবে এখনো তা চূড়ান্ত করে বলার সুযোগ নেই।