মঙ্গলবার ৮ নভেম্বর মার্কিন কংগ্রেসের নির্বাচনি ফলাফল হোয়াইট হাউজে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট এবং তার দলের ভাগ্য নির্ধারণের পাশাপাশি গোটা জাতির দিকনির্দেশনার ওপর এক বিরাট প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে। মার্কিন কংগ্রেসের আকারে পরিবর্তন ঘটলে তা সারা দেশে আমেরিকানদের দৈনন্দিন জীবনকে সরাসরিভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
এই নির্বাচনে জো বাইডেনের ওপর কোন ব্যালট হচ্ছে না। তবে প্রেসিডেন্টের মেয়াদের মাঝামাঝি (যে জন্য এর নাম মিড টার্ম ইলেকশন) এই নির্বাচনে সিদ্ধান্ত হবে কংগ্রেসের পাশাপাশি বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে আইনসভা এবং গভর্নরের অফিসগুলোকে কে নিয়ন্ত্রণ করবে। তবে এই নির্বাচন প্রেসিডেন্টের কর্মকাণ্ড এবং দেশের বর্তমান হালচাল সম্পর্কে পরোক্ষভাবে ভোটারদের মতামত প্রকাশের সুযোগ এনে দেয়। একটি সূত্র জানিয়েছে, লাল ঢেউ তেমন প্রভাব রাখতে না পারায় জো বাইডেন আবার ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হবেন। কারণ ফলাফল যতোটা খারাপ হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং বিল ক্লিনটনের চেয়ে ভাল অবস্থান তার। ফলে বাইডেনের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে বলে সহযোগীরা জানিয়েছেন।
মার্কিন অর্থনীতির বর্তমান সমস্যা এবং অপরাধ ও অবৈধ অভিবাসন নিয়ে ভোটাররা যখন উদ্বিগ্ন, তার মধ্যে নির্বাচনের এই রায় বর্তমান প্রেসিডেন্টের জন্য বেশ কঠোর হতে পারে। এছাড়াও এই ফলাফল ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ভোটের প্রচারণার ক্ষেত্রকে নানাভাবে প্রভাবিত করবে, বিশেষভাবে সেখানে যদি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে পেনসিলভেনিয়া, উইসকনসিন এবং মিশিগানের মতো ভোটের চিরাচরিত রাজনৈতিক লড়াইয়ের ময়দান গুরুত্বপূর্ণ গভর্নর এবং স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যে ফলাফল উঠে আসতে পারে তার ফলে সেখানে গর্ভপাতের আরো কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে। কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ কোন দলের হাতে যাবে এবং অঙ্গরাজ্যগুলোতে কোন দল ক্ষমতা লাভ করবে তা গর্ভপাতের ইস্যুটি ছাড়াও অন্য নীতিগুলোকে প্রভাবিত করবে। রিপাবলিকানরা বিজয়ী হলে অভিবাসন, ধর্মীয় অধিকার এবং সহিংস অপরাধ মোকাবিলাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রত্যাশা করা যেতে পারে। অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটরা বিজয়ী হলে পরিবেশ, স্বাস্থ্যসেবা, ভোটের অধিকার এবং আগ্নেয়াস্ত্রের নিয়ন্ত্রণের মতো ইস্যুগুলো তাদের এজেন্ডায় ওপরের দিকে থাকবে। তবে এবারের কংগ্রেসের নির্বাচন বিভিন্ন নীতির বাইরের কিছু বিষয়ের ওপরও প্রভাব ফেলবে। কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করতে সফল হলে বিভিন্ন বিষয়ে সংসদীয় তদন্ত কমিটি তৈরির ক্ষমতা হাতে চলে আসবে।