চলে গেলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী, অভিনয়শিল্পী জিনাত বরকতউল্লাহ। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ধানমন্ডির নিজ বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। জিনাত বরকতউল্লাহর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে অভিনেত্রী বিজরী বরকতউল্লাহ।
দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করেছেন তিনি। চলতি বছরের শুরুর দিকে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ এবং ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছিলেন গুণী এই শিল্পী।
স্বাধীনতা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ধারায় নৃত্য চর্চার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন জিনাত বরকতউল্লাহ। তিনি উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় নৃত্যের তিন ধারা ভরতনাট্যম, কত্থক, মণিপুরি নৃত্যে তালিম নিলেও লোকনৃত্যেই নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন।
গুণী এই শিল্পী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের পারফর্মিং আর্টস একাডেমিতে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে শিল্পকলা একাডেমির সংগীত ও নৃত্যকলা বিভাগের অন্তর্ভুক্ত প্রোডাকশন বিভাগের পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। দীর্ঘ ২৭ বছর এখানে কর্মরত ছিলেন তিনি।
নৃত্যশিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য জিনাত বরকতউল্লাহ ২০২২ সালে একুশে পদক লাভ করেন।
তিনি শুধু নৃত্য চর্চাই নয়, অভিনয়েও তার মেধার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘মারিয়া আমার মারিয়া’ নাটকের মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন তিনি। প্রায় ৮০টি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেন জিনাত বরকতউল্লাহ। তার অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘ঘরে বাইরে’,‘অস্থায়ী নিবাস’, ‘বড় বাড়ি’,‘কথা বলা ময়না’।
ব্যক্তিগত জীবনে নাট্যকার মোহাম্মদ বরকতুল্লাহর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ২০২০ সালের ৩ আগস্ট মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।