এক বছরের সন্তানকে খাবার খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে গৃহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পিংকি আক্তার গত বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাতে ঢাকার ভাটারা থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।
এদিকে পরীমণির সঙ্গে ঘটে যাওয়া বিষয়টি অনেকেই ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করছেন। অনেকেই এই নায়িকার পাশে দাঁড়িয়েছেন। এবার পরীমণির পাশে দাঁড়ালেন কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সি।
ন্যান্সি তার ফেসবুকে লিখেন, গৃহকর্মী নির্যাতিত হয় যেমন সত্যি ঠিক তেমনি কিছু গৃহকর্মীর দ্বারা গৃহকর্ত্রীও কম সমস্যার মুখোমুখি হন না! আমার পুরো বাসায় সিসি ক্যামেরা আছে শুধু মাত্র গৃহকর্মীর মিথ্যা হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য!
নিজের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে কণ্ঠশিল্পী লিখেছেন, বছর দশেক আগে আমার বাসার গৃহকর্মী বাসার দারোয়ান এর সাথে পালিয়ে যায়। গৃহকর্মীর পরিবার তাদের মেয়ে গুম হয়েছে অভিযোগ তুলে মোটা টাকা দাবি করে। আমি সরাসরি পুলিশের শরণাপন্ন হই এবং তাদের আন্তরিক সহযোগিতায় ঘন্টা দুয়েকের মাথায় পলাতক গৃহকর্মী তার প্রেমিক সহ উদ্ধার হয়।
তিনি যোগ করেন, পরে জানতে পারি, আমাকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা পূর্ব পরিকল্পিত! এ ঘটনার পরই আমার বাসায় কথা রেকর্ড হয় এমন সিসি ক্যামেরা সেটাপ করি। দু বছর আগে আমার ছোট্ট মেয়েটাকে দেখাশোনার জন্য এজেন্সি থেকে যে মেয়েটাকে এনেছিলাম সে তার বোনের সাথে মিলে আমার বিয়ের গয়না এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এর স্বর্ণপদক চুরি করে। থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর উল্টো গৃহকর্মী আমার নামে নির্যাতনের অভিযোগ তোলার চেষ্টা করে। আমি সিসি ক্যামেরার বদৌলতে হয়রানির হাত থেকে বেঁচে যাই।
তিনি আরও বলেন, বাসার রান্নার লোক যে কত জ্বালিয়েছে তার হিসেব নেই। বেতনের বাইরে যতোই দেইনা কেন তাদের খুশি করা যায়না। মন চাইলে কাজে আসে, অন্যথায় আসেনা। গত বছর ফেব্রুয়ারী মাসে পুরো বাসার সিংহ ভাগ ফার্নিচার বদলাই। আগের সব আসবাব আমার বাসার রান্নার মহিলা ট্রাক ভর্তি করে নিয়ে যায়, আমিও ভাবলাম এবার হয়তো সে আর কাজে ফাঁকি দিবেনা। এতো বড় উপকারের ফলাফল হিসেবে কি পেলাম জানেন? তার চাহিদা এখন আর হাজারের ঘরে রইলো না, লাখের ঘরে চলে গেলো! বিগত জুলাই মাসে বিরক্ত হয়ে তাকে বিদায় করলাম। আমার বাসার সব রান্না দশ মাস যাবৎ আমিই করি। আমার ঘরে এখন বাজার খরচ কমে গেছে, বাসি খাবার খাইনা বললেই চলে। স্বামী সন্তান ভাই ও খুশি, তাদের রান্না করে খাইয়ে আমিও অনেক তৃপ্তি পাই। ঘরের কাজে সহযোগিতার জন্য একজন এখনো আছে। আসলে কিছু করার নেই। বিশেষ করে কর্মজীবী মায়েদের সন্তানের জন্য হলেও অপরিচিত একজনের ওপর ভরসা করতে হয়। প্রতিবার আশা করি এবারের গৃহকর্মী পরিবারের সদস্যর মত হবে। সে আশা কখনো পূরণ হয়, বেশিরভাগ সময় হয়না।
সবশেষে সংবাদকর্মীদের দায়িত্ব সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তিনি লিখেছেন, সংবাদ মাধ্যম একটু সংবেদনশীল হোন। সব কিছুতে বাণিজ্য দেখবেন না। নির্যাতিতার পরিচয় গৃহকর্মীও হতে পারে আবার গৃহকর্ত্রীও হতে পারে। সত্যিকারের ভুক্তভোগীর পাশে দাঁড়ান। পরীমনির মত এমন আরও তারকাদের ঘাড়ে ভর করে আর কত শিরোনাম বেচবেন বলুন! আপনাদেরও নিশ্চই কিছু দায় আছে, তাইনা?