দাম্পত্য কলহের পর সংসার ভেঙে যাওয়া, জমিজমা বেদখল হওয়া এবং অর্থসংকটসহ শারীরিক অসুস্থতা মিলে সম্পূর্ণভাবে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক মোহাম্মদ মহসিন। যে কারণে তিনি রাজধানীর একটি বাসায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
মোহাম্মদ মহসিনের ছোট ভাই কোহিনুর পিন্টু বলেছেন, ‘২০১৩ সালে তার সংসার ভেঙে যায়। স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর ২০১৪ সালে তিনি কানাডা থেকে দেশে ফিরে আসেন। খেলোয়াড়ি জীবনে যে টাকা উপার্জন করেছিলেন তা দিয়ে সাভারে জমি-জমা কিনেছিলেন। সেগুলোও দুর্বৃত্তরা দখল করে নিয়েছে। কানাডায় থাকাকালীন অর্থকড়ি যা জমিয়েছিলেন তার প্রায় পুরোটাই রেখে দিয়েছেন তার স্ত্রী। যে কারণে তাকে ঢাকায় ফিরতে হয়েছিল শূন্য হাত।’
‘এখন ভাইয়ের শরীরটা দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। স্মৃতি হারিয়ে ফেলেছেন। পরিবারের কাউকে কাউকেছাড়া অন্যদের চিনতে পারছে না। সবকিছু ভুলে যাচ্ছেন। ভাত খেতে বললে বলেন, এইতো এখনই খেলাম। দরজা খোলা পেলে বাইরে চলে যায়। কিছুই মনে রাখতে পারছে না। কিছুদিন আগে এতটা খারাপ ছিল না। তিনি ভুল চিকিৎসারও শিকার হয়েছিলেন। সবকিছু মিলিয়ে তার অবস্থা খুবই খারাপ। আমি বলে পুরোটা বোঝাতে করতে পারবো না। দেখলে বুঝতেন ভাই, এখন কি অবস্থায় আছেন।’
মোহাম্মদ মহসিন ছিলেন গোলপোস্টের অতন্ত্র প্রহরি। মহসিন আবাহনীর হয়ে তিনবার এবং মোহামেডানের হয়ে দুইবার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ফেডারেশন কাপে। এর মধ্যে দুইবার মোহামেডানের জার্সিতে একবার আবু হানিফ জার্সিতে।
১৯৮২ সালে কলকাতার আশীষ জব্বার স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টে তিনি ছিলেন চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানের গোলরক্ষক। কাজী সালাউদ্দিনের ক্যারিয়ার যখন সবচেয়ে স্বর্ণ সময়ে, তখন তার পেনাল্টি ঠেকিয়ে বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিলেন মহসিন। ১৯৯৫ সালে ক্যারিয়ারের ইতি টানেন তিনি। তিনি ফুটবলে অসামান্য অবদান রাখায় পেয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারও।