মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। শুক্রবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চতুর্থ দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। আজ সকাল থেকে শিক্ষকদের স্লোগানে উত্তাল প্রেসক্লাব এলাকা।
শিক্ষক নেতারা বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য।
তারা আরও বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বেতন স্কেলের একধাপ নিচে প্রদান করা হয়। তাছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল না দেওয়ায় উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান। এতে সহকারী প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে।
তারা বলেন, আমাদের এক দফা এবং দাবি একটিই আমাদের জাতীয়করণ করতে হবে। দাবি আদায় না করা পর্যন্ত আমরা রাজপথেই অবস্থান করব। দাবি আদায়ে আজ ৪ দিন ধরে আমরা সমবেত হয়েছি। দিনব্যাপী এ আন্দোলন চলবে। এমনকি যতদিন পর্যন্ত দাবি না মেনে নেওয়া হয়, ততদিন পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।
মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে বছরের পর বছর উপজেলা থেকে শুরু করে জেলা ও বিভাগীয় শহরে সমাবেশ, মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিলসহ প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বারবার স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
এর আগেও তারা একই দাবিতে বেশ কয়েকবার সংবাদ সম্মেলন করেন। তাতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. বজলুর রহমান মিয়া জানিয়েছিলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, ১০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীনে একই সিলেবাসের কাজে নিয়োজিত থেকে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। এছাড়া বিগত কয়েক বছর যাবত অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে ৪ শতাংশ কেটে নেওয়া হচ্ছে। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করা হলেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও জানান, বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থা স্মার্ট করতে প্রয়োজন স্মার্ট শিক্ষক। তাই স্মার্ট শিক্ষক পেতে শিক্ষায় বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের বিকল্প নেই।