২০২৩-২৪ অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খাতে ৪২ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। যা চলতি অর্থবছরে ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ খাতে দুই হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০১ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদে এ প্রস্তাব পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
শিক্ষা অবকাঠামো উন্নয়ন ও সংস্কারে কথা জানিয়ে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে আধুনিক ও মডেল প্রতিষ্ঠান হিসেবে তৈরি করার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ২০০৯ থেকে ৩০ এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত মোট ৩৫১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩৭১টি কলেজ জাতীয়করণ করা হয়েছে। সরকারি বিদ্যালয়বিহীন ৩১৫টি উপজেলা সদরে অবস্থিত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে মডেল স্কুলে রূপান্তর করা হয়েছে। জেলা সদরে অবস্থিত সরকারি পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজে ১৮০টি ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। বেসরকারি কলেজসমূহের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্বাচিত ১ হাজার ৬১০টি কলেজের মধ্যে ১ হাজার ৪৭৩টি কলেজে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার উপযোগী ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এসইএসডিপির (Secondary Education Sector Development Plan) আওতায় ৩৩টি মডেল মাদরাসা ও সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলে ৬২টি নতুন বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে সরকারি কলেজসমূহে বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ২০০টি সরকারি কলেজে ১৭৬টি ভবনের ৬ তলা ভিতবিশিষ্ট একাডেমিক ভবন এবং ৩৩টি হোস্টেল নির্মাণ কাজ চলমান আছে। জেলা সদরে অবস্থিত সরকারি পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের উন্নয়ন প্রকল্পে সরকারি পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজে ২১৯টি ভবনের মধ্যে ১৮০টি ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আমরা ঢাকা শহর সন্নিকটবর্তী এলাকায় ৯টি, রংপুরে ২টি, রাজশাহীতে ২টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২টি, ময়মনসিংহ, সিলেট ও জয়পুরহাট জেলায় ১টি করে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপনের কাজ হাতে নিয়েছি। ৬৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভোকেশনাল কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
জ্ঞান-বিজ্ঞানভিত্তিক, প্রযুক্তি-নির্ভর শিক্ষা ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের তথ্য-প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তোলা ও পাঠদান পদ্ধতিকে আধুনিক করার স্বার্থে নির্বাচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে ২০০৯ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত মোট ৩৩ হাজার ২৮৫টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম এবং ১১ হাজার ৩০৭টি কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। আরও প্রায় ৬৪ হাজার ৯২৫টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম এবং ১২ হাজার ল্যাব স্থাপন করা হবে। প্রাথমিক স্তরের ২১টি পাঠ্যপুস্তকের Digital Content, ৬ষ্ঠ শ্রেণির ১৬টি পাঠ্যপুস্তকের Interactive Digital Text এর কার্যক্রম সম্পন্ন করে ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। ৭ম ও ৮ম শ্রেণির ৬টি বিষয়ের পাঠ্যপুস্তকের ই-লার্নিং মডিউল এবং ৯ম-১০ম শ্রেণির ৬টি পাঠ্যপুস্তকের ই-লার্নিং ম্যাটেরিয়াল উন্নয়ন ও আপলোড করা হয়েছে। নির্বাচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৭১০টি আইসিটি লার্নিং সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, মানসম্মত শিক্ষাদান ও ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মাধ্যমে ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত মোট ৩৩ লক্ষাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা। হয়েছে। এছাড়া, ১৯৫টি শিক্ষা ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়েছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯০টি প্রশিক্ষণ কোর্সের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থাপক ও শিক্ষকসহ মোট ৪ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে এবং শিক্ষা ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিষয়ক ১৫টি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।