মাদারীপুরে বৃদ্ধকে থানায় নিয়ে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে এক পুলিশের উপ- পরিদর্শকের (এসআই-নিরস্ত্র) বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় বিষয়টি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৬ জুলাই) দুপুরে ভুক্তভোগীর করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিৎ চৌধুরী এ নির্দেশ দেন।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা হলেন—শিবচর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই-নিরস্ত্র) নূর মোহাম্মদ।
ভুক্তভোগীর নাম আকমান মাদবর (৬০)। তিনি শিবচর উপজেলার সরকারের চর এলাকার মৃত আলাউদ্দিন মাদবরের ছেলে।
মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী আকমান মাদবর একটি পাটকাটা মামলার ৪ নম্বর আসামী। আদালতের নির্দেশক্রমে আকমান মাদবরসহ আর চার আসামিকে গত রোববার (৯ জুলাই) গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন থানা পুলিশের এস আই নূর মোহাম্মদ। এদের মধ্যে আকমান মাদবরকে থানার দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে নিয়ে যায় নূর মোহাম্মদ। পরে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। এতে তার বাম হাত ভেঙে যায়। পরে তাকেসহ ওই চারজনকে আদালতে পাঠানো হয়। ওই মামলায় জামিনে মুক্ত হয়ে পুলিশ সদস্য নূর মোহাম্মদকে আসামি করে রোববার আদালতে মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী আকমান মাদবর।
ভুক্তভোগী ও মামলার বাদী আকমান মাদবর বলেন, পুলিশ সদস্য নূর মোহাম্মদ আমাকে থানার একটি রুমে নিয়ে বেঞ্চের নিচে মাথা দিয়ে সারা শরীরে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হাত ভেঙে ফেলে। পরে প্রস্রাব ও থুথু ফেলে আমাকে দিয়ে প্রস্রাব ও থুথু চাটায়। এক পর্যায়ে আমাকে দিয়ে আব্বা ডাকায় ওই পুলিশ সদস্য। এই ঘটনা কাউকে বললে আবারো নির্যাতন চালানোর হুমকি দেয় তিনি। ভয়ে আমি কাউকে কিছু বলতে পারিনি। পরে জামিনে এসে আমি তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আমি এ ঘটনায় ও পুলিশ সদস্যের সুষ্ঠু বিচার চাই।
তবে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে শিবচর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই-নিরস্ত্র) নূর মোহাম্মদ বলেন, মারধরের কোনো ঘটনাই সেদিন ঘটেনি। এগুলো সব মিথ্যা ও বানোয়াট। এমনটা হলে যেদিন তাকে আদালতে চালান দিয়েছিলাম সেদিনই তিনি আদালতে বিষয়টি জানাতেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন বলেন, থানায় বসে কোনো আসামীকে এভাবে নির্যাতন করার আইনগত অধিকার কারো নেই। ভুক্তভোগীর করা মামলায় মহামান্য আদালত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা ন্যায় বিচার কামনা করছি।