নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে একটি মাজারের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অপর দুইজন মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। দুই পক্ষই অভিযোগ লিখছেন।
আর আগে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়নের কলুংকা ও সামাইকোনা গ্রামে এ সংঘর্ষ হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সোহাগ তালুকদার ও রায়হান সিদ্দিকী ফারুকের লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
আহতরা হলেন, মামুন মিয়া (৩৪), বাবুল খান (৫৫), নূরুল ফকির(৫৫), মানিক মিয়া (২৫), ইঞ্জিল মিয়া(৫৩), নজরুল ইসলাম (৬০), মুনসুর খান (৩৮), আবুল কালাম (৪০) ও আজিজুল হক (৫৮) ও আমিনুল (৩২)।
এদের মধ্যে ৮ জনকে মমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতদের মধ্যে বেশিরভাগ সোহাগ তালুকদারের লোক বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কলুংকা গ্রামে অবস্থিত আজিজ শাহ মাজারের ওরশ ঘিরে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত। মাজারে ৮-৯ বছর ধরে নিয়মিত ওরশ অনুষ্ঠিত হয় মাজার কমিটির তত্ত্বাবধানে। কিন্তু এবার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সোহাগ তালুকদার কমিটির লোকজনকে বাদ দিয়ে নিজেই ওরশ করার উদ্যোগ নেন। এলাকার লোকজন এর প্রতিবাদ করেন। কমিটির সভাপতি এনামুল হক এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের কাছে ওরশ বন্ধের আবেদন জানান। এর জেরে চেয়ারম্যান সোহাগ চেয়ারম্যান ও গ্রামের রায়হান সিদ্দিকী ফারুকের মধ্যে ঝামেলা তৈরি হয়। পরে এ নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়।
চেয়ারম্যান সোহাগ তালুকদার বলেন, মাজারের ওরশ নিয়ে সমস্যা হওয়ায় প্রশাসন তা বন্ধ করেছে। ওই পক্ষের সঙ্গে আমাদের পূর্ব বিরোধ রয়েছে। তারই জেরে আমাদের পক্ষের লোকজন মাজারের পাশে মসজিদে নামাজ পড়ার সময় তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমার পক্ষের ৬ জন গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে রায়হান সিদ্দিকী ফারুক বলেন, চেয়ারম্যান দাপট দেখিয়ে কমিটি বাদ দিয়ে ওরশ করতে চেয়েছেন। পরে কমিটি সভাপতি অভিযোগ দেওয়ার পর ওরশ বন্ধ হয়ে যায়। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান তার লোকজনকে দিয়ে এই হামলা করিয়েছে। শহরে যাওয়ার রাস্তার মোড়ে চেয়ারম্যানের চেম্বার। ওখান দিয়ে আমাদের কেউ শহরে গেলেই তার ওপর রামদা- বল্লম দিয়ে হামলা চালায়। এ পর্যন্ত আমাদের বেশ কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করেছে। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে মামলা করব।
মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর সেখানে পুলিশ প্রহরা বাড়ানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।