সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি উপাধি পেলেন দেশের ফোক সম্রাজ্ঞী খ্যাত গায়িকা মমতাজ বেগম। ভারতের তামিলনাড়ুর ‘গ্লোবাল হিউম্যান পিস ইউনিভার্সিটি’ তাকে এ সম্মাননা জানিয়েছে সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য। গত শনিবার ১০ এপ্রিল গায়িকা ও সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে। মমতাজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে ১২ এপ্রিল ৯টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
পরে বিতর্ক উঠে যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রিটি দেয়া হয়েছে সেটির বৈধতা নিয়ে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করেন, ভারতে গ্লোবাল হিউম্যান পিস ইউনিভার্সিটি নামে বৈধ কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। প্রতিষ্ঠানটি ডক্টরেট ডিগ্রি বিক্রি করে বলেও মন্তব্য করেন কেউ কেউ।
এমন অভিযোগের বিপরীতে মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) মুখ খুলেছেন মমতাজ৷ তিনি বলেন, ‘কিছু বিতর্কের কথা আমার কানে এসেছে৷ কিন্তু আমার কাছে বিশ্ববিদ্যালয়টি ভুয়া মনে হয়নি। আর ভুয়া বলে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আসছে সেটা এ বিশ্ববিদ্যালয় নয়।’
মমতাজ আরও বলেন, ‘আমি নিজে ও-ই বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে এটা গ্রহণ করেছি। ওই আয়োজনে শত শত মানুষ ছিলেন। আমার হাতে এই সম্মাননা তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান পি ম্যানুয়েল। একই সময়ে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন চেন্নাইয়ের সাবেক জেলা জজ থিরু এজে মুরুগানানথাম ও তামিলনাড়ুর আধ্যাত্মিক ধর্মগুরু খলিফা মাস্তান সাহেব। এ বিশ্ববিদ্যালয় ভুয়া এমন কোনো আভাসই মেলেনি।’
‘আমি যা পেয়েছি তা আমার কাছে অনেক সম্মানের। গান করার ও মানুষের সেবা করার স্বীকৃতি পেয়েছি। এই ডিগ্রি আমার জন্য অনুপ্রেরণার’- যোগ করেন মমতাজ। কণ্ঠশিল্পী হিসেবে সাতশ’র বেশি একক অ্যালবামের রেকর্ড, সুদীর্ঘ ৩০ বছর বাংলা গানকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা ও সমাজসেবা ছাড়াও নানামুখী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত রেখে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন মমতাজ। সেজন্যই বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে ‘ডক্টর অব মিউজিক’ ডিগ্রি প্রদান করেছে গ্লোবাল হিউম্যান পিস ইউনিভার্সিটি।
প্রসঙ্গত, মমতাজ বেগমের জন্ম ১৯৭৪ সালের পাঁচ মে। তিনি গানের জগতে আসার আগে প্রথম জীবনে বাবা মধু বয়াতির কাছে তালিম নেন। পরে মাতাল রাজ্জাক দেওয়ান এবং শেষে লোক গানের শিক্ষক আবদুর রশীদ সরকারের কাছে গান শেখেন। বাবা মধু বয়াতি ছিলেন মূলত বাউল শিল্পী।
এদিকে, সংসারে অভাব থাকায় শৈশবে বাউল গান গাইতেন মমতাজ। এরপর পালাগান, জারি গান-সহ বহু গান গেয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে জনপ্রিয় হয়েছেন তিনি। ২০০০ সালে হানিফ সংকেতের ‘ইত্যাদি’-তে ‘রিটার্ন টিকিট হাতে লইয়া আইসাছি এ দুনিয়ায়’ গান গেয়ে পোঁছে যান বাংলার গণমানুষের কাছে৷ এরপর একে ‘ফাইট্টা যায়’, ‘খায়রুন লো’, ‘আগে যদি জানতাম রে বন্ধু’সহ বহু শ্রোতানন্দিত গান তিনি উপহার দিয়েছেন অডিও এবং চলচ্চিত্রে৷
বর্তমানে তিনি আওয়ামীলীগের একজন সক্রিয় রাজনীতিবিদ। নির্বাচিত সংসদ সদস্যও।