ছাগলকাণ্ডে ভাইরাল হওয়া মতিউর রহমান এবং তার দুই স্ত্রী ও সন্তানদের ব্যাংক হিসাব ও বেনিফিশিয়ারি অ্যাকাউন্ট (বিও হিসাব) স্থগিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এ নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি তাদের সব হিসাবের যাবতীয় তথ্য চেয়েছে সংস্থাটি।
আজ মঙ্গলবার বিএফআইইউ সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি শেয়ার বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস এবং ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠিয়েছে বিএফআইইউ।
যাদের ব্যাংক ও বিও হিসাব স্থগিতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন— মতিউর রহমান, তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ, প্রথম স্ত্রীর মেয়ে ফারজানা রহমান ইপ্সিতা, প্রথম স্ত্রীর ছেলে আহাম্মেদ তৌফিকুর রহমান, দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলী, দ্বিতীয় স্ত্রীর মেয়ে ইফতিমা রহমান মাধুরী, দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত, দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে ইরফানুর রহমান ইরফান।
আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের ব্যাংক হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি, লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি তথ্য সরবরাহের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মতিউর রহমান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট এবং সোনালী ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন।
দুর্নীতির বিষয়টি সামনে এলে তাকে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়। পরে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকেও তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে গত ৪ জুন পাওয়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মতিউর রহমানের দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিরুদ্ধে দলটি অনুসন্ধান শুরু করেছে।
এদিকে মতিউর রহমান, তার স্ত্রী ও ছেলেকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। যদিও গুঞ্জন রয়েছে এরইমধ্যে তারা দেশত্যাগ করেছেন।
প্রসঙ্গত, ঈদুল আজহায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাদিক অ্যাগ্রো থেকে মতিউর রহমানের ছেলে ইফাতের ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল এবং ঢাকার বিভিন্ন খামার থেকে ৭০ লাখ টাকার গরু কিনেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে উঠে আসে। এরপর থেকে মতিউর রহমানের ছেলের দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি, গাড়ি, আলিশান জীবনযাপন, মতিউর রহমান ও পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলো বাড়ি, জমিসহ নামে-বেনামে সম্পত্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।