ভয়েই বিএনপি নির্বাচনে আসতে চাইছে না বলে মন্তব্য করেছেন ১৪ দলের নেতা ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে মানুষ ভোট দেবে উন্নয়নের পক্ষে, দেশকে এগিয়ে নেওয়া যাওয়ার পক্ষে। পাকিস্তানে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মানুষ ভোট দেবে না। এ ভীতি থেকেই বিএনপি নির্বাচনে আসতে রাজি নয়। তারা ষড়যন্ত্রের জাল পাকাচ্ছে। সব ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ১৪ দলের সমাবেশ ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (আইডিইবি) মিলনায়তনে এ কর্মসূচি করা হয়।
গণতন্ত্র ও উন্নয়নের অভিযাত্রা ব্যাহত করতে বিএনপিসহ দেশবিরোধী অপশক্তির সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এ সমাবেশ ও আলোচনা সভার আয়োজন করে ১৪ দল।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের সমালোচনা করে রাশেদ খান মেনন বলেন, বিএনপি মনে করছে, দ্রব্যমূল্য, জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন ইস্যুতে জনগণ বিক্ষুব্ধ। তারা বিক্ষোভ করে রাস্তায় নামাবেন। সেই কথাগুলো দিয়ে তারা মাঠ দখলের চেষ্টা করছেন।
তিনি বলেন, মাঠ দখলে নেমে আসল সত্যটা বের করে দিয়েছেন তারা। কয়েকদিন ধরে বেশ গরম গরম কথা বলে বিএনপির মধ্য থেকে আসল সত্যটা বেরিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের আজকের পরিস্থিতি নাকি পাকিস্তান আমলের চেয়েও খারাপ। অথচ পাকিস্তান বলছে, বাংলাদেশ আজ কত ভালো অবস্থানে রয়েছে।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, পাকিস্তান সরকার তাদের দেশকে সুইডেনের মতো করতে চান। কিন্তু সেদেশের পত্রিকায় বড় বড় করে লেখা হয়েছিল, আমরা সুইডেন চাই না, পাকিস্তান অন্তত বাংলাদেশের মতো হোক। পাকিস্তান যেখানে আমাদের মতো হতে চায়, আমাদের অনুকরণ করতে চায়। পাকিস্তান যেখানে আমাদের চেয়ে অন্তত দশগুণ পিছিয়ে। সেখানে পাকিস্তানি ফিরে যাওয়ার যে বাহানা বিএনপি করছে, তা খুব সরলভাবে নেওয়ার প্রশ্নই উঠে না।
মেনন আরও বলেন, ২০১৪ সালে যখন বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছিল, সেদিন বঙ্গবন্ধু-কন্যার পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে প্রস্তাব করা হয়েছিল, আপনারা নির্বাচনকালীন সরকারে আসুন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ যে মন্ত্রণালয় চান, তা দেওয়া হবে। কিন্তু বেগম জিয়া আসেননি। সেই নির্বাচনকালীন সরকার যদি আমরা গঠন না করতাম, তাহলে আজকে যে সাংবিধানিক ধারা বাংলাদেশে অব্যাহত, তা থাকতো না।’
‘অথচ আমরা আজকে পত্রিকায় দেখি, ২০১৪ সালের সেই নির্বাচন নিয়ে নানান কথা চলে। ২০১৮ সালে আবারো তাদেরকে বলা হলো- নির্বাচনে আসুন, তারা আসলো। কিন্তু এসে নির্বাচনকে একটি প্রহসনের পর্যায়ে নিয়ে গেলো। তারা নির্বাচনকে দেখাতে চেয়েছে প্রহসনের নির্বাচন হিসেবে। আজকেও তারা সেই খেলায় মেতে উঠেছে’ বলেন রাশেদ খান মেনন।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন ১৪ দলের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ।