রয়টার্স ও আরটির খবরে বলা হয়েছে, আর্জেন্টিনার বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার ডিসেম্বর মাসে ২১১ শতাংশে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার দেশটি এ বিষয়ে সরকারি তথ্য প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে যে, ১৯৯০ সাল থেকে অর্থনৈতিক সংকটে পড়া দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন আলোচিত প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মিলেই।
আর্জেন্টিনা ছাড়াও ওই অঞ্চলের অন্যান্য দেশেও মুদ্রার তীব্র অবমূল্যায়ন হয়েছে। এর ফলে বছরের পর বছর ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
অবসরপ্রাপ্ত সুসানা ব্যারিওর বয়স ৭৯ বছর। তিনি বলেন, আমাদের জীবনকে আনন্দময় করত এমন সব খাবার বা জিনিস ত্যাগ করতে হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন তার বন্ধুদের দাওয়াত দিয়ে বারবিকিউ পার্টির আয়োজন করতে পারেননি।
আর্জেন্টিনার সামাজিক জীবনের মূল অংশ বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করা। সুসানা বলেন, বন্ধুদের সঙ্গে বারবিকিউ পার্টি করা খুবই সাধারণ একটি বিষয়। তারপরও এটি এখন অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
বছরের পর বছর ধরে মুদ্রাস্ফীতি আর্জেন্টিনাকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছে। ১৯৯০ এর দশক থেকে শুরু হয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন। যা এখন সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। এর ফলে সাধারণ খাবারের দামও কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।
সম্প্রতি দেশটিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন ‘আর্জেন্টিনার ট্রাম্প’ খ্যাত জাভিয়ের মিলেই। তিনি একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে- মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস করা, গভীর আর্থিক ঘাটতি কমানো এবং দুর্নীতিবাজ ও সরকারি সম্পদ লুটেরাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ। জনগণ এখন প্রেসিডেন্টের দিকে তাকিয়ে আছে।
তবে ক্ষমতা গ্রহণের পর মিলেই জানিয়েছেন যে, অর্থনৈতিক অবস্থা ঠিক হতে আরও অনেক সময় লাগবে। এই পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।
আর্জেন্টিনার মোট জনসংখ্যার পাঁচ ভাগের দুই ভাগ মানুষ এখন দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে। অবসরপ্রাপ্ত গ্রাসিয়েলা ব্রাভো (৬৫) বলেন যে, কোনো কিছুই কম দামে পাওয়া যায় না। তিনি জানান যে, বাজার থেকে কতটি আলু কেনা হয়েছে সেটিও সাবধানতার সঙ্গে গণনা করতে হয়।
তিনি বলেন, কেজি হিসেবে না কিনে এখন দুই তিনটি আলু কিনতে হয়। একজনের যা প্রয়োজন তার চেয়ে অনেক কম কিনতে বাধ্য হয় অনেকে।