ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার কুকরিমুকরি এলাকার নদীসংলগ্ন এক পুকুরে দুই দিনে ৯টি তাজা রুপালি ইলিশ পাওয়া গেছে। পুকুরে ইলিশ পাওয়ার খবরে গ্রামবাসী ঘেরের পাড়ে ভিড় জমিয়েছেন। নদীর ইলিশ পুকুরে পাওয়ায় গ্রামবাসীর মধ্যে যেমন আনন্দ, তেমন কৌতূহলও সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (২০ মার্চ) দুপুরের ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার কুকরিমুকরি ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আমিনপুর এলাকার নদীসংলগ্ন একটি পুকুরে সেচ দিয়ে মাছ ধরার সময় মিলল ৯টি তাজা রুপালি ইলিশ। একেকটি ইলিশ প্রায় ১ কেজি ওজনের। পুকুরে ইলিশ পাওয়ার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে রুপালি ইলিশ দেখতে নারী-পুরুষ ভিড় জমান।
সবাই পুকুর বললেও স্থানীয়রা বলছেন, কুকরিমুকরি ইউনিয়নের চারপাশে মেঘনা নদী। নদী পার হলেই সাগর মোহনা। নদী ভাঙনের হাত থেকে ইউনিয়নের চারপাশে ২০১৪ সালে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে করে বাঁধের ভেতরের অংশে খালগুলোর মুখ বন্ধ হয়ে যায়। পরে মাটি কাটার পর খালের সঙ্গে মিশে পুকুরের আকার ধারণ করে।
স্থানীয়রা এসব গর্ত ঘের তৈরি করে মাছের চাষ করেন। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে এই পুকুরগুলোয় প্রবেশ করে। হয়তো জোয়ারের পানির সঙ্গে ইলিশের রেণু এই ঘেরগুলোতে ঢুকতে পারে বলে স্থানীয়দের ধারণা করছেন।
চরফ্যাশন প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কুকরিমুকরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসেম মহাজন জানান, ঘেরে মাছ ধরার সময় জাল টানলে রুই, কাতলা, পাঙাস, তেলাপিয়ার সঙ্গে নয়টি ইলিশ পাই। এরমধ্যে গতকাল শুক্রবার পাঁচটি এবং আজ শনিবার চারটি ইলিশ পাওয়া গেছে। ইলিশগুলোর ওজন ৮০০-৯০০ গ্রাম। গত বর্ষায় জোয়ারের পানিতে পুকুরটি ডুবে যায়। ওই সময় হয়তো ইলিশগুলো পুকুরে প্রবেশ করে।
এদিকে পুকুরে ইলিশ পাওয়ার খবর শুনে দেখতে আসা উৎসুক জনতা সরন মজুমদার বলেন, জীবনে আমি কখনো এমন ঘটনা শুনি নাই যে পুকুরে ইলিশ পাওয়া গেছে। এমন খবর শুনে চিন্তা করলাম একটা সেলফি তুলতেই হবে। তাই নদীর পাড়ে মাছ দেখতে চলে এলাম।
বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অফিসের সহকারী পরিচালক এএসএম নাজমুল সালেহীন জানান, জোয়ারের পানিতে পুকুর তলিয়ে গেলে তখন হয়তো কোনো ইলিশ প্রবেশ করতে পারে। যদি পুকুরের পানি নোনা হয় এবং পুকুরে নদীর মতো খাবার পায় তাহলে ইলিশ বাঁচতে পারে।