প্রাণের জোয়ার নিয়েই বুধবার (৬ অক্টোবর) বিসিবির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী চার বছরের জন্য দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থার ২৩ পরিচালক কাউন্সিলরদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে মনোনীত হয়ে এসেছেন দুই পরিচালক জালাল ইউনুস ও আহমেদ সাজ্জাদুল আলম। এবারের নির্বাচনি লড়াইয়ে বলার মতো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। সমমনা সংগঠকেরাই নিজেদের মধ্যে লড়াই করেছেন। তাই ভোটে অন্যরকম একটা আমেজ ছিল।
সকাল থেকেই স্লোগান, মিছিলে মুখরিত মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম। প্রার্থীদের সমর্থকদের হর্ষধ্বনিতে উত্সবের রং ছড়িয়ে পড়েছিল। ভোটগ্রহণের সময় শেষ হওয়ার পরই স্টেডিয়ামে বেজে উঠল ঢাকঢোল। উত্সব যেন পূর্ণতা পেলো। কিন্তু ভোটের বাস্তবতা অবশ্য এমন ছিল না। কারণ সাজসাজ রবের নির্বাচনে সশরীরে ভোট দিতে হাজির হওয়া ভোটারের সংখ্যা খুব বেশি নয়। করোনার অজুহাতে পোস্টাল, ই-ভোট দিয়েছেন অনেক ভোটার। তবে ভোটকেন্দ্রে আসা ভোটারদের বেশ যত্ন-আত্তি করা হয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন হোটেলেও আতিথ্য পেয়েছেন অনেকে।
তিন ক্যাটাগরিতেই হয়েছে নির্বাচন। সাবেক ক্রিকেটারদের মধ্যে ভোটের লড়াইয়ে জিতেছেন নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও খালেদ মাহমুদ সুজন। তবে প্রথমবার অংশ নিয়ে ভগ্ন মনোরথে ফিরতে হয়েছে খালেদ মাসুদ পাইলটকে। ঢাকার ক্লাবগুলোর ক্যাটাগরি-২-এ প্রত্যাশিত ছবিই ফুটে উঠছে। সর্বোচ্চ ৫৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন নাজমুল হাসান পাপন, গাজী গোলাম মুর্তজা পাপ্পা ও এনায়েত হোসেন সিরাজ। প্রভাবশালী পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিক ৫২ ভোট পান। উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে ফাহিম সিনহা ৫১, ইফতেখার রহমান মিঠু ৫০, মাহবুব উল আনাম ৪৭ ভোট পেয়েছেন। ভোটের আগের রাতে নাম প্রত্যাহার করে নেওয়া মাসুদুজ্জামানও ৫ ভোট পান।
জয়ের পর পাপন বলেছেন, ‘আমরা যে ধারণা করেছিলাম, তার চেয়ে অনেক বেশি। কোথাও কোথাও ৯৯ ভাগ, মানে সবাই ভোট দিতে এসেছেন। এই যে ভোট পড়েছে, এটাই সবচেয়ে বড় কথা। সাধারণত নির্বাচনে দেখি যে অনেকে ভোট দিতে আসেন না, তাদের মতামত আমরা পাই না। এই নির্বাচনে প্রায় সব ভোট পড়েছে।’ ক্যাটাগরি-১-এ ঢাকা বিভাগ থেকে দুটি পরিচালক পদে নির্বাচিত হয়েছেন নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও তানভীর আহমেদ টিটু—১৭ ভোট করে পেয়েছেন তারা। এখানে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়া সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু ২ ভোট এবং খালিদ হোসেন কোনো ভোট পাননি।
রাজশাহী বিভাগে সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরীর কাছে হেরে গেছেন সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট। স্বপন ৭ ও পাইলট ২ ভোট পেয়েছেন। হারের পর পাইলট বলেছেন, ‘আমি রাজশাহী বিভাগের কাউন্সিলর ছিলাম। কাউন্সিলররা হয়তো আমার চেয়ে তাকে (স্বপন) যোগ্য মনে করেছেন। আমি আশা করি, উনি ক্রিকেটকে এগিয়ে নেবেন। আমি দু-এক দিন ধরেই বুঝতে পারছিলাম, বিষয়টা আমার পক্ষে যাচ্ছে না।’ ক্যাটাগরি-৩-এ সুজন নিরঙ্কুশ বিজয় পেয়েছেন। ৩৭ ভোট পেয়েছেন সাবেক এই অধিনায়ক। তার প্রতিদ্বন্দ্বী নাজমুল আবেদীন ফাহিম পান ৩ ভোট।