বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচনে যারা ভোট চুরিতে জড়িত তাদের তালিকা করা হচ্ছে। সারা বিশ্বের দৃষ্টি বাংলাদেশের দিকে। তারা একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। বাংলাদেশের মানুষ না খেয়ে আছে। আর এক শতাংশের নিচের মানুষ হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। তারা লাখ কোটি টাকা লোপাট করেছে এবং বিদেশে পাচার করেছে। এসব টাকা ফেরত দিতে হবে।
শনিবার (১১ মার্চ) সরকারের পদত্যাগ ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির উদ্যোগে কেন্দ্র ঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশের নির্বাচন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তারা আইন করেছে, নির্বাচনে ভোট চুরির সঙ্গে যারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আসবে। এটা তো বাইরে থেকে আসবে এবং ভেতর থেকেও তাদের বিচার হবে। ওয়ান ইলেভেনের তাদের যেসব মামলা তারা খারিজ করে দিয়েছে, গত এগারো বছরের গুম, খুনের যে মামলা, এগুলো একত্রিত করলে আওয়ামী লীগের ৩০০ আসনের মধ্যে একটিতেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রার্থী পাওয়া যাবে না। সবাইকে জেলে যেতে হবে। বিচারের আওতায় আসতে হবে। কেউ ছাড় পাবে না। বাংলাদেশের মানুষকে মালিকানা ফিরিয়ে দিয়ে চলে যান। ৫০ বছর পর আবার দেখা হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। রাস্তাঘাটে, পথে, মাঠে, সমাবেশে প্রত্যেক জায়গায় আজ একটা প্রশ্ন, এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে কবে বিদায় নেবে। আমরা নিশ্বাস ফেলতে পারছি না। আরও কিছু দিন এ অবৈধ সরকার যদি থাকে, আমরা কেউ বাঁচব না। শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় প্রতিটি দিন অতিবাহিত করছি। আমাদের মুক্তি দিন এবং দেশকে মুক্ত করেন। এটা হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের ম্যাসেজ। জনগণ দ্রুত এ সরকারের বিদায় দেখতে চায়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে বিস্ফোরণগুলো হচ্ছে, এগুলোকেও তারা রাজনীতিকরণের চেষ্টা করছে। একটা সরকারের আমলে যখন এগুলো ঘটে, তখন সে সরকার দেশ পরিচালনাতে ব্যর্থ। তারা রাজনীতি করছে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
আমীর খসরু বলেন, এরশাদের পতনের সময় মন্দিরে মন্দিরে আক্রমণ হয়েছিল। স্বৈরাচাররা যখন পতনের অবস্থানে চলে যায়, তারা তখন এ ধরনের কর্মকাণ্ড করে। তারা আরও করবে। কারণ আওয়ামী লীগের কোনো রাজনীতি নেই। দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সরকার অন্য খেলাধুলার ষড়যন্ত্রে নেমেছে।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চরম দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ থেকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত হয়েছে। দেশে চরম দুর্নীতি চলছে। এই অবৈধ সরকার দুর্নীতি ও দুঃশাসনের মাধ্যমে জনগণের অর্থ লোপাট করে জনগণের টাকা বিদেশে পাচার করছে। দেশের অর্থনীতি অবনতির মূলে রয়েছে বিনা ভোটে অবৈধ সরকারের এমপি ও মন্ত্রী এবং আমলারা। যার ফলে গণতন্ত্রের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয় গ্রেডে।
তিনি বলেন, সরকারের দুর্নীতি থেকে রেহাই পাচ্ছে না দেশের ধর্মপ্রাণ জনগণ। হাজীদের বিমান ভাড়া প্রায় দুই লাখ টাকা, ওমরাতে এক লাখ টাকা, পর্যটক ভিসায় ৬০ হাজার টাকা বেশি নিচ্ছে। ধর্মীয় বিষয় নিয়ে হাজীদের সঙ্গে সরকার চরম বৈষম্য সৃষ্টি করছে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটনের পরিচালনায় মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক এম এ আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, মো. শাহ আলম ও আবদুল মান্নান।