সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশের ভূমি বিরোধ পরিবীক্ষণ নাগরিক প্রতিবেদন ২০২৩’ উপলক্ষ্যে একটি মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ভূমি নিয়ে সহিংসতায় জীবন-জীবিকার ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। অনেকে অধিকার ক্ষুণ্ন হলেও আর্থিক, সামাজিক অবস্থান ও নিরাপত্তাজনিত ভীতির কথা বিবেচনায় প্রভাবশালীদের কাছে নতি স্বীকার করেন। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে আমাদের অধিকার সচেতনতা বাড়াতে হবে ও সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, কখনো ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ মাঠ পর্যায়ের ভূমি অফিসগুলোতে অভিযোগ করে যথাযথ প্রতিকার পান না বলে জানান। কিছু সংখ্যক অদক্ষ ও দুর্নীতিবাজ কর্মচারীর কারণে জনগণের ভূমি অধিকার নষ্ট হয়। ভূমি ব্যবস্থাপনার সব ক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করা জরুরি।
ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা ও দ্বন্দ্বের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রয়েছে উল্লেখ করে ড. কামাল বলেন, জমিদারি ব্যবস্থা, সুদূর ব্রিটিশ আমল ও পাকিস্তানি আমল থেকে বীজ বপন হয়েছে। ভূমি সংঘাত ও দ্বন্দ্ব নিরসন করে ভূমি অধিকার প্রতিষ্ঠায় সৃজনশীল ও মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।
তিনি বলেন, বান্দরবানের লামা সরইয়ের রেংয়েনপাড়া হামলা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার ম্রোদের আবাসস্থল পরিদর্শন করেছি আমরা। যারা অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ভূমির অধিকার নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কমিশন। পাশাপাশি পুনর্বাসন না করে তেলেগু সম্প্রদায়কে উচ্ছেদ মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে মনে করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কমিশন।
তিনি আরও বলেন, সংখ্যালঘু, দলিত ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ভূমির অধিকার রক্ষায় কমিশন সোচ্চার রয়েছে। কমিশনে অভিযোগ দায়ের করার সহজ পদ্ধতি রয়েছে। দেশের যেকোনো নাগরিক অনলাইনে ও ফোনে অভিযোগ জানাতে পারেন। অনেকে কমিশনে আসেন এবং অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন। কমিশন অত্যন্ত গুরুত্ব ও আন্তরিকতার সাথে সেগুলো বিবেচনা করে থাকে। অধিকার লঙ্ঘনের শিকার সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের কমিশন থেকে আমন্ত্রণ জানাই, যাতে তারা আমাদের সেবা গ্রহণ করেন।
মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ ল্যান্ড কনফ্লিক্ট সিএসও মনিটরিং রিপোর্ট ২০২৩ এর সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়। ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ রিপোর্টটি নিয়ে মতামত প্রদান করেন।
তিনি বলেন, রিপোর্টটির কিছু সীমাবদ্ধতা আমার চোখে পড়েছে। কারিগরি দিক শক্তিশালী করা প্রয়োজন।