অবশেষে ১০০ প্যাকেট খাদ্য সহায়তা প্রদানের খরচ বাবদ ৬০ হাজার টাকা পেয়েছেন সেই বৃদ্ধ ফরিদ উদ্দিন খান। টাকা দিয়েছেন শাহীনূর আলম নামে স্থানীয় এক ধনী ব্যক্তি। তিনি প্রশাসনের অনুরোধে ওই টাকা দিয়েছেন বলে দাবি করলেও উপজেলা প্রশাসনের কেউ বিষয়টি নিয়ে রহস্যজনক কারণে মন্তব্য করেননি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রোববার সন্ধ্যায় বাসায় ডেকে ফরিদ উদ্দিনের হাতে টাকা তুলে দেন শাহীনূর আলম। প্রশাসনের অনুরোধে নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এই টাকা দিয়েছেন বলে জানান তিনি। বিকালে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আরিফা জহুরা অবশ্য বলেছিলে, কোন স্থানীয় ব্যক্তি যদি স্বত:স্ফুর্ত হয়ে ফরিদ উদ্দিনকে সহায়তা করতে চান তবে সেটিও নেয়া হবে।
শাহীনূর আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফরিদ পৈত্রিক সূত্রে এই বাড়ি পাইছে। তাদের ছয় ভাই ও এক বোন এই বাড়ির মালিক। সে একা না। তার পরিবারে অবিবাহিত এক মেয়ে ও প্রতিবন্ধী এক ছেলে আছে। এক মেয়েরে বিয়ে দিছেন। সে কারখানার মালিকও না, সেখানে চাকরি করে। তার সম্পর্কে তথ্য ভুল গেছে প্রশাসনের কাছে। এই কারণে তারে ইউএনও সাহেবা ১০০ ব্যাগ খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার নির্দেশ দেন। এই খাদ্য দিতে গিয়ে স্বর্ণ বিক্রি করতে হইছে, টাকা ধার করতে হইছে। এই অবস্থায় আমাকে প্রশাসন থেকে টেলিফোন করে। আমি যেহেতু বিত্তবান তাই সহায়তার জন্য আমাকে সবাই ফোন করে। বিকালে আমি ফরিদ, তার স্ত্রী ও ভাতিজাকে ডেকে এনে ৬০ হাজার টাকা দিছি।’
তবে প্রশাসনিক কোনো কর্মকর্তা তাকে এই টাকা প্রদানের জন্য অনুরোধ করেছেন তা সাংবাদিকদের জানাতে রাজি হননি শাহীনূর আলম। বিষয়টি জানতে ইউএনও আরিফা জহুরাকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। পাশাপাশি উপজেলা পরিষদের একাধিক কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানতে ফোন করলেও তারা জানেন না বলে জানিয়েছেন।
এদিকে ফরিদ আহমদের পরিবারের লোকজন জানান, টাকা দেওয়ার সময় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ফরিদ আহমদের কাছ থেকে কাগজে একটি স্বাক্ষর নিয়েছেন। ওই কাগজে লেখা ছিল, তিনি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ভুল তথ্য দিয়েছিলেন। তার ভুলের কারণেই তিনি শাস্তির মুখে পড়েছিলেন। কাগজে স্বাক্ষর দেওয়ার বিষয়টি ফরিদ আহমদ নিজেও নিশ্চিত করেছেন। তবে বৃদ্ধ ফরিদ বলেন, ‘ভুল কার হয়েছে তা আল্লাহ দেখছেন। কিন্তু আমার যে সম্মান গেল এই ক্ষতিপূরণ কে দিবো? আমি রাস্তায় বাইর হইলে মানুষ আমার দিকে তাকাইয়া থাকে। আমার তখন মাটির নিচে ঢুইকা যাইতে মন চায়।’