ভারতের কর্ণাটকে গত বছর স্কুলগুলোতে হিজাব নিষিদ্ধের পর অসন্তোষ ও আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে থাকা ওই আন্দোলনের প্রধান মুখ হয়ে উঠেছিলেন ১৭ বছরের তরুণী তাবাসসুম শাইক। সেই তরুণীই দ্বাদশের পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন।
হিজাব আন্দোলনের সময় তাবাসসুমকে নিয়ে দেশে তো বটেই, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতেও বহু রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এবার রাজ্যের কলা বিভাগ থেকে প্রথম হয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছেন তিনি।
গত ২১ এপ্রিল পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। সেখানে কলা বিভাগের পরীক্ষায় ৬০০ পয়েন্টের মধ্যে ৫৯৩ পয়েন্ট অর্জন করেন তিনি। তাবাসসুম হিন্দি, মনোবিজ্ঞান এবং সমাজ বিজ্ঞানে ১০০ পয়েন্টের মধ্যে ১০০ পয়েন্টই অর্জন করেন।
ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে উদুপি কলেজে মুসলিম শিক্ষার্থীদের হিজাব পরে ক্লাসে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। এর জেরে পুরো রাজ্যে হিজাব আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। সেই আন্দোলনে অংশ নেন কয়েকশ শিক্ষার্থী। তাদেরই একজন ছিলেন তাবাসসুম শাইক।
হিজাব আন্দোলনের কারণে ১৮ বছর বয়সী তাবাসসুমের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। রাজ্য সরকার হিজাব পরিধান নিষিদ্ধ করার পর কয়েকদিন ক্লাসে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাবার কথায় আবার পড়ালেখা শুরু করেন তাবাসসুম।
সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তাবাসসুম জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের জারি করা নিয়ম মেনে হিজাব খুলে প্রথমে ক্লাস করতে কষ্ট হতো তার। কিন্তু তার বাবা তাকে বোঝান যদি হিজাবের কারণে তিনি আর ক্লাসে না যান তাহলে তিনি ও তার সম্প্রদায় আরও পিছিয়ে যাবে। বাবার এমন কথা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে নিজের পড়ালেখা চালিয়ে যান তিনি। যার ফল পেয়েছেন দ্বাদশের পরীক্ষায়।
তাবাসসুম জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই হিজাব পরেন তিনি। যখন এর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় তখন বেশ কষ্ট পেয়েছিলেন। কিন্তু সেটি এখন সামলে নিয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব পরতে চান তিনি। তবে তার আশঙ্কা সেখানেও হিজাব পরতে বাধা দেওয়া হতে পারে।