ভারতে গত ৯১ দিনের মধ্যে মঙ্গলবার দেশটিতে সবচেয়ে কম মানুষ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। এছাড়া দৈনিক মৃত্যুও নেমে এসেছে হাজারের কাছাকাছি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের দাপট কমলেও এখন চোখ রাঙাচ্ছে তৃতীয় ঢেউ। আর সম্ভাব্য সেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে মুখ খুলেছেন ভারতের অন্যতম শীর্ষ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেঠি।
আগামী ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে ভারতে ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ আঘাত করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এ নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি’কে দেবী শেঠি জানিয়েছেন, দেশে করোনা দ্বিতীয় ঢেউ এখনও শেষ হয়নি। আইসিইউতে এখনও অনেক রোগী রয়েছেন। ফুসফুসের গুরুতর সংক্রমণ রয়েছে বেশ কিছু মানুষের। কোভিড রোগীদের জন্য এখনও সবসময় আইসিইউ খালি পাওয়া যাচ্ছে না। তবে সংক্রমণ নিচের দিকে নেমেছে। তিনি বলেন, কবে তৃতীয় ঢেউ আসবে, তা আগে থেকে কেউই হয়তো বলতে পারবে না। তবে সেপ্টেম্বরের পরে যেকোনো সময় এই ধাক্কার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
দেবী শেঠি আরও বলছেন, তৃতীয় ঢেউ দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি তীব্র হতে পারে। তৃতীয় ঢেউয়ে দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে কী না, তা নিয়ে নিশ্চিত কোনো মন্তব্য করেননি তিনি। তবে তৃতীয় ঢেউ প্রসঙ্গে আরও বেশি সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিয়ে ডা. শেঠি বলছেন, আমাদের প্রস্তুত হওয়া উচিত।
করোনার নিত্য নতুন ভ্যারিয়েন্ট প্রসঙ্গেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেবী শেঠি। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, করোনা মহামারি মোকাবিলায় ভারতে আরও অনেক বেশি আইসিইউ বেড, অক্সিজেন বেড, পেডিয়াট্রিক বেডের প্রয়োজন। পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন না থাকা নিয়ে ভারতে এখনও অনেকে হাহাকার করছেন। কিন্তু দেবী শেঠির আশ্বাস, আগামী একমাসের মধ্যেই যথেষ্ট পরিমাণে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। ভ্যাকসিন নিয়ে নানা গুজব ছড়ানো রুখতে ভিডিও তৈরি করে তা প্রচার করতে হবে। এক্ষেত্রে তারকাদের উপস্থিতি আরও কার্যকর হতে পারে।
করোনা পরবর্তী শারীরিক জটিলতা প্রসঙ্গে ভারতের অন্যতম সেরা এই হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, অ্যাসিম্পটোমেটিক রোগীরা সাধারণত করোনা পরবর্তী শারীরিক জটিলতায় ভোগেন না। যারা আইসিইউতে ছিলেন, বা স্টেরয়েড দিতে হয়েছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা দেখা যেতে পারে। তবে কী করে এ সমস্যা মেটানো যায়, তা নিয়ে গবেষণা চলছে। কিন্তু তৃতীয় ঢেউ রুখতে টিকা নেওয়াকেই একমাত্র উপায় বলে মানছেন তিনিও।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে ভারতে প্রতিদিনই কমছে দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৪২ হাজার ৬৪০ জন মানুষ। অন্যদিকে মারা গেছেন ১ হাজার ১৬৭ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৯৯ লাখ ৭৭ হাজার ৮৬১ জনে। আর মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৩০২ জনে।