শুরুতে ব্যাট করতে নেমে তাসের ঘরের মতো ভেঙে যায় বাংলাদেশ ব্যাটিং লাইনআপ। ব্যাটিং ব্যর্থতায় বড় সংগ্রহ গড়া হয়নি। সুবিধা করতে পারেননি বোলাররাও। বাংলাদেশকে ৭ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করেছে ভারত।
রোববার (৬ অক্টোবর) গোয়ালিয়রের শ্রীমন্ত মাধবরাও সিন্ধিয়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ১৯ ওভার ৫ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে খেলতে নেমে ১১ ওভার ৫ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌছে যায় ভারত।
অভিষেকের বিদায় রান রেটে প্রভাব ফেলতে পারেনি। তিনে নেমে রীতিমতো টর্নেডো বইয়ে দেন সূর্যকুমার যাদব। ভারত অধিনায়কের সামনে বল ফেলার জায়গা খুঁজে পাচ্ছিলেন না বাংলাদেশি বোলাররা। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে সূর্যের ঝড় থামিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। এই পেসারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ধরে পড়েন সূর্যকুমার। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৪ বলে ২৯ রান।
আরেক ওপেনার সাঞ্জু স্যামসনও ভালো শুরু পেয়েছিলেন। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি। মেহেদি মিরাজের বলে ক্যাচ দেওয়ার আগে ১৯ বলে ২৯ রান করেছেন তিনি।
৮০ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর দারুণ জুটি গড়েন হার্দিক পান্ডিয়া ও নিতিশ কুমার। দুজনে অপরাজিত থেকে জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছেড়েছেন। হার্দিকের ব্যাট থেকে এসেছে ১৬ বলে ৩৯ রান। নিতিশ অপরাজিত ছিলেন ১৬ রান করে।
এর আগে ব্যাটিংয়ে ইনিংসের শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। ইনিংসে নিজের খেলা প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দারুণ শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন লিটন দাস। তবে পরের বলেই রীতিমতো আত্মহত্যা করলেন এই ওপেনার! অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের ফুল লেংথের বল টেনে এনে স্লগ সুইপ করেন লিটন। বল উঠে যায় সোজা উপরে। রিঙ্কু সিং নিয়েছেন সহজ ক্যাচ। ২ বলে ৪ রানেই থেমেছেন লিটন।
আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন শুরু থেকেই নড়বড়ে ছিলেন। তবে দ্বিতীয় ওভারে হার্দিক পান্ডিয়াকে ছক্কা মেরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু পরের ওভারেই আর্শদীপ সিংকে ড্রাইভ করতে গিয়ে ইনসাইড এজে বোল্ড হয়েছেন। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৮ রান।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে প্রথমবার বল করতে আসেন মায়াঙ্ক যাদব। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম ওভারটি মেইডেন পেয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৯ রান তুলে বাংলাদেশ।
আগের ওভারের সবগুলো বল ডট খেলে তাওহিদ হৃদয় পরের ওভারে ফিরেছেন বড় শট খেলতে গিয়ে। বরুণ চক্রবর্তীর খাটো লেংথের বলে পুল করতে গিয়ে লং অনে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। ১৮ বল খেলে ১২ রান করেছেন তিনি।
৪০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে যখন ধুঁকছে দল তখন উইকেটে আসেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে সুবিধা করতে পারেননি এই অভিজ্ঞ ব্যাটারও। উল্টো উইকেট বিলিয়ে দলের বিপদ বাড়িয়েছেন তিনি। মায়াঙ্ক যাদবকে এগিয়ে এসে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।
দলের বিপর্যয়ে হাল ধরতে পারেননি জাকের আলি অনিকও। ৬ বল খেলে ৮ রানে ফিরেছেন তিনি। তাতে ৫৭ রানের মধ্যেই প্রথম সারির ৫ ব্যাটারকে হারায় বাংলাদেশ।
দলের বিপর্যয়ে এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করার চেষ্টা করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে মিরাজকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছেন। তবে ২৭ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। ১২তম ওভারের শেষ বলে ওয়াশিংটন সুন্দরকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
আটে নেমে ঝোড়ো শুরু করেন রিশাদ হোসেন। নিজের খেলা প্রথম বলেই ছক্কা মারেন তিনি। দুই বলে ১০ রান করা রিশাদও বেশি দূর যেতে পারেননি। কাউন্টার অ্যাটাক করতে গিয়ে ৫ বলে ১১ রানে থেমেছেন রিশাদ।
এরপর তাসকিন ও মিরাজ মিলে সপ্তম উইকেট জুটিতে যোগ করেন ২৩ রান। তাসকিন ১২ রান করে রান আউটের শিকার হন। এরপর শরিফুল-মুস্তাফিজ দ্রুত ফিরলে অল আউট হয় বাংলাদেশ। ব্যাটারদের এমন ব্যর্থতার দিনে এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করেছেন মিরাজ। তিনি ৩২ বলে অপরাজিত ৩৫ রান করেছেন।