নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র হেরেছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মুখ্যমন্ত্রী হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও হেরে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার নজির আরও রয়েছে। ভারতীয় সংবিধানের ১৬৪ (৪) ধারা অনুযায়ী নির্বাচনে না জিতলেও মুখ্যমন্ত্রী হতে কোন বাধা থাকছে না মমতার। তবে শপথ নেওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে তাকে অন্য কোনও আসন থেকে জিতে আসতে হবে। উল্লেখ্য, প্রার্থীর মৃত্যুতে দুটি আসনে ভোট স্থগিত রয়েছে।
২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল যখন সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে প্রথমবারের মতো রাজ্যের ক্ষমতায় আসীন হয়, তখনও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার আগে বিধায়ক ছিলেন না মমতা। পরে উপ-নির্বাচনে ভবানীপুর আসন থেকে বিধায়ক হন তিনি।
ভারতে পরাজিত হয়েও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার বহু নজির রয়েছে। সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়া তিরথ সিং রাওয়াতও নির্বাচিত বিধায়ক নন। এটা নতুন কিছু নয়। স্বাধীনতার পর থেকেই এ ধরনের ঘটনার নজির রয়েছে ভারতের রাজনীতির ইতিহাসে।
১৯৫২ সালে স্বাধীন ভারতে প্রথম সাধারণ নির্বাচন হয়। পাশাপাশি বিধানসভা ভোট হয় তৎকালীন মাদ্রাজে। তখনও হারতে হয়েছিল দাপুটে কংগ্রেস নেতা মোরারজি দেশাইকে। এরপর বোম্বে কংগ্রেস পরিষদীয় নেতা নির্বাচিত হন তিনি। পরে মুখ্যমন্ত্রীর পদেও বসেন। ওইবার নির্বাচনে প্রার্থী না হয়েও তৎকালীন মাদ্রাজের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন সি গোপালাচারী। হেরে যাওয়ার ভয়ে তিনি নির্বাচনে লড়াই করেননি। পরে রাজ্যের বিধান পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর গদিতেও বসেন।
এরপর ১৯৭০ সালে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী ছিলেন ত্রিভুবন নারায়ণ সিং। কিন্তু নির্বাচনে হারেন তিনি। ছয় মাসের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর পদে আসীন হওয়ার পর অবশ্য উপ-নির্বাচনেও পরাজিত হন। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
২০০৯ সালে ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হন শিবু সোরেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন তিনি। ছয় মাস পর ফের মেয়াদ বাড়াতে চেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের চাপে পদত্যাগ করেন। পরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয় রাজ্যে।
উল্লেখ্য, টানা তৃতীয়বারের মতো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আগামী বুধবার শপথ নিতে যাচ্ছেন মমতা। আজ সোমবার বিকেলে তৃণমূল কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কার্যালয় কলকাতার ‘তৃণমূল ভবনে’ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান দলটির নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়।