কয়েক বছর ধরে ভয়াবহ আর্থিক সংকটের মুখে রয়েছে পাকিস্তান। এমন অবস্থার মধ্যেও সামরিক শক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছে দেশটি। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দেশটি পরিচালনা করে বলে মনে করা হয়। অভিযোগ আছে, দেশ চালানোর জন্য পাকিস্তান সুষ্ঠু সরকারের চেয়েও শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর উপর বেশি ভরসা করে থাকে।
ভারত এবং পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব অন্তহীন। ভারতের বিরুদ্ধে প্রায়ই নানা সামরিক পরিকল্পনা সাজায় পাকিস্তান। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত পাক লেফটেন্যান্ট জেনারেলের কথায় তেমনই এক পরিকল্পনার কথা প্রকাশ্যে এসেছে।
পাকিস্তানের প্রথম সফল পারমাণবিক পরীক্ষার ২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে গত মে মাসে ইসলামাবাদের ইনস্টিটিউ অফ স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল খালিদ কিদওয়াই সেখানে ভাষণ দেন। খালিদ তর ভাষণে পাকিস্তানের দীর্ঘমেয়াদী পারমাণবিক নীতি নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি জানান, স্থল, জল এবং আকাশপথে ভারতের বিরুদ্ধে ত্রিমুখী প্রতিরোধে প্রস্তুত পাকিস্তান।
ভারতের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্রকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসাবে দেখছে পাকিস্তান। খালিদের বক্তৃতা অনুযায়ী, স্থল, জল এবং আকাশপথের লড়াইয়ে ব্যবহারের উপযোগী পরমাণু অস্ত্র আছে পাকিস্তানের কাছে।
স্থলভাগে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে ভারতকে ঠেকাতে প্রস্তুত আর্মি স্ট্র্যাটেজিক ফোর্স কমান্ড (এএসএফসি)। জলপথে তৈরি আছে নেভাল স্ট্র্যাটেজিক ফোর্স কমান্ড (এনএসএফসি) এবং আকাশে প্রতিরোধে প্রস্তুত এয়ার ফোর্স স্ট্র্যাটেজিক কমান্ড (এএফএসসি)।
খালিদ জানিয়েছেন, কৌশলগত এবং প্রয়োগমূলকভাবে ভারতের বিরুদ্ধে সবরকম প্রতিরোধ গড়ে তুলতে প্রস্তুত পাকিস্তান। প্রতি ক্ষেত্রেই জোর দেওয়া হচ্ছে পরমাণু অস্ত্রে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ভারতের বিরুদ্ধে ত্রিমুখী প্রতিরোধ গড়ে তুলে পাকিস্তান একটি ‘পারমাণবিক ছাতা’ তৈরি করছে।সাম্প্রতিক সময়ে সামরিক কৌশলে কিছু পরিবর্তন এনেছে পাকিস্তান। তারা জিরো-রেঞ্জ কৌশলে ভারতের সীমা বরাবর পারমাণবিক ল্যান্ডমাইন পুঁতে রাখার নীতি নিতে পারে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে যে, এর সবই এখনও সম্ভাবনার পর্যায়ে। যদিও পাকিস্তান তাদের পারমাণবিক ক্ষেত্রের পরিকল্পনা খুব একটা প্রকাশ্যে আনে না।
পাকিস্তানে পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণের অবাধ ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছিল সত্তর-আশির দশকে। পাকিস্তান পারমাণবিক বোমার সফল পরীক্ষা করে ১৯৯৮ সালে।