বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ভাত ও পানি পেতে লড়াইয়ের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন । তিনি বলেন, প্রিয় ভাই ও বোনেরা আপনাদের সন্তাদের ভাত ও পানি দিয়ে বাঁচিয়ে রাখতে চাইলে লড়াই ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। সোমবার (১৪ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে মহিলা দল আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর সেটা করতে পারলেই আমরা কেবল এই কষ্ট থেকে মুক্তি পাবো। তিনি বলেন, মুক্তি আসবে ইনশাআল্লাহ। নিশ্চয়ই আসবে। আমাদের হাত ধরেই মুক্তি আসবে; ইতিহাস তাই বলে। বাকশালের হাত থেকে গণতন্ত্রকে মুক্ত করেছিলেন আমাদের নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। সামরিক স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে পুনরায় গণতন্ত্রকে মুক্ত করেছিলেন আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, একসময় একটি বক্তৃতা খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল ‘ভাতে মারবো-পানিতে মারবো ইত্যাদি’ তারা বলেছিল যে মারবে, কিন্তু আজকে সরকার ক্ষমতায় এসে মারা শুরু করেছে। চাউলের দাম ছিল ১৫ টাকা তা হয়ে গেছে ৪৫ টাকার বেশি। পানির দাম গত ১৩ বছরে ১৪ বার বেড়েছে আবার শতকরা ২০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির নীতিনির্ধারক বলেন, আমরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সুচিকিৎসা চাই শুধু মানবিক কারণে নয়। এদেশের জনগণকে নিয়ে তাদের যথাযথ নেতৃত্ব দিয়ে স্বৈরাশাসককে পরাজিত করার এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার ইতিহাস আছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার। আন্দোলন-সংগ্রামের সফল এবং পরীক্ষিত নেত্রী যাতে এই সরকারের অনাচার দুর্নীতি এবং অক্ষমতার বিরুদ্ধে জনগণকে নিয়ে আন্দোলন করতে না পারে সে জন্যই তাকে কারাগারে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
‘জনগণ পরিবর্তন চায়। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্ব গতির কষ্ট থেকে মুক্তি চায়। আর সেজন্যেই তারা তাদের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পাশে চায়।’
তিনি বলেন, যে কৃষক দ্রব্য উৎপাদন করে তারা ন্যায্যমূল্য পায় না। যারা ভোক্তা তারাও কিন্তু ন্যায্যমূল্য পায় না। তাহলে মাঝখানের এই টাকাগুলো খায় কারা, চাঁদাবাজরা, সিন্ডিকেট ওয়ালারা আর এরা কাদের লোক; সরকারের লোক। কাজেই আমার আপনার যে কষ্ট, আমার গ্রামের কৃষকদের যে কষ্ট, আমার দেশের শ্রমজীবী মানুষের যে কষ্ট, এজন্য দায়ী এই বিনা ভোটের সরকার।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আজ গণতন্ত্র বন্দী হয়ে রয়েছে। গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্য আমরা আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে লড়াই করছি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আরেকবার গণতন্ত্রকে মুক্ত করব এবং বাংলাদেশের জনগণকে মুক্ত করবে ইনশাআল্লাহ।
মহিলা দলের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এই লড়াইয়ে আপনাদেরকে সামনের কাতারে থাকতে হবে কারণ মহিলারা হচ্ছে জনসংখ্যার অর্ধেক। শ্রমিকরা জনসংখ্যার অর্ধেক নয়, ছাত্ররা জনসংখ্যার অর্ধেক নয়, যুবকরা জনসংখ্যার অর্ধেক নয়, কিন্তু মহিলারা জনসংখ্যার অর্ধেক। সবচেয়ে বড় অঙ্গ দল কোনটা? মহিলা দল! সেই দলকে সামনে থাকতে হবে। সবচেয়ে কষ্টে রয়েছেন মহিলারা। কারণ জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ার ফলে সন্তানের মুখে খাবার দিতে পারেন না। এই অনাচার থেকে দেশকে বাঁচাতে সবাই আসুন আমরা দেশকে মুক্ত করি। গণতন্ত্রকে মুক্ত করি গণতন্ত্রের মাতাকে মুক্ত করি এবং দেশের মানুষকে এই কষ্ট থেকে মুক্তি দেই।
এসময় বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ সহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।