নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে বিদায়টা আগেই মোটামুটি নিশ্চিত হলেও, খাতা-কলমে হিসাবটা বাকি ছিল বাংলাদেশের। গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে বিবর্ণ পারফরম্যান্সে সেটাই নিশ্চিত করল নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। অবশ্য পুরো টুর্নামেন্টেই তাদের চিত্রটা একই ছিল। ব্যাট-বলে আরেকটি ব্যর্থ দিনে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে টাইগ্রেসরা।
দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রোটিয়া মেয়েদের বিপক্ষে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জ্যোতি। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে ম্যাচটি জিততেই হতো তাদের, তবে আটকে থাকত যদি-কিন্তুর হিসাবে। বাজে ব্যাটিংয়ের পর একই দৃশ্য বোলাররাও মঞ্চায়ন করায় তার আর দরকার পড়েনি। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ সর্বসাকুল্যে ১০৬ রান সংগ্রহ করে।
ব্যাট করতে নেমেই ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই বাংলাদেশ ওপেনার দিলারা আক্তার আউট হয়ে যান। প্রথম ৫ ওভারেই তারা কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেনি, তুলেছিল মাত্র ১০ রান। এমন শুরুর পর সাথি রানির ধীরগতির ইনিংস দলীয় কিছুটা এগিয়ে নিতে থাকে। তবে একবার জীবন পেয়েও ৩০ বলে ১৯ রান করে আউট হয়ে যান এই ওপেনার। তৃতীয় উইকেট জুটিতে সোবহান মোস্তারি ও অধিনায়ক জ্যোতি মিলে যোগ করেন ৪৫ রান।
যদিও পুরো আসরের মতোই এদিনও কেউ টি-টোয়েন্টির মেজাজে ব্যাট তো দূরে থাক, ১০০ স্ট্রাইকরেটও পূর্ণ করতে পারেননি। সোবহানার (৪৩ বলে ৩৮) বিদায়ে ভাঙে ৫৬ বলের এই জুটি। শেষ ২ ওভারে ২৩ রান তোলায় কিছুটা মান বাঁচে বাংলাদেশের। যদিও নির্ধারিত ওভার শেষে পুঁজি দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ১০৬ রানের। শেষ পর্যন্ত ৩৮ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন জ্যোতি।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাট করতে নামা প্রোটিয়া অধিনায়ক লরা উলভার্টকে (৭) দ্রুত ফিরিয়ে ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত দেন ফাহিমা খাতুন। তবে বাকিটা সময় আর সেই স্বস্তি ছিল না। চিরচেনা দৃশ্য হাজির করে বাংলাদেশ অন্তত তিনটি ক্যাচ ছাড়ে, রান আউটেরও সুযোগ হারায় একাধিকবার। দ্বিতীয় উইকেটে তাজমিন ব্রিটস ও অ্যানেকি বখ ৫৩ রানের জুটি গড়ে জয়ের পথ সহজ করে তোলেন। জীবন পাওয়া তাজমিন ৪১ বলে ৪২ রান এবং ২৫ বলে ২৫ রান করেন বখ। তাজমিন আউট হয়ে ফেরার সময়ই প্রোটিয়ারা জয়ের সুবাস পেয়ে গিয়েছিল।
শেষদিকে ম্যারিজেন ক্যাপ ১৩ ও ক্লো টাইরন ১৪ রানে অপরাজিত থেকে প্রোটিয়াদের জয় নিশ্চিত করেন। ১৬ বল এবং ৭ উইকেট হাতে থাকতেই জয় নিশ্চিত করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এ নিয়ে ৪ ম্যাচে তিন জয় প্রোটিয়াদের সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। সমান সংখ্যক ম্যাচে মাত্র একটি জয় পেয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ বছর পর এবারের বিশ্বকাপে তারা প্রথম জয় পেয়েছিল, এরপর বাকি ম্যাচগুলোর দৃশ্যপট ছিল শেষ ম্যাচের মতোই।