চাকরির নামে প্রতারণার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস ছাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে মাইনুল হাসান তুষারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক নারী।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সদর) আদালতে হোসনা আক্তার নামের এক নারী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। আদালত মামলাটি সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাস্টার রোলে অফিস সহায়ক পদে জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এ পদে চাকরির জন্য উপজেলার গুনারা গ্রামের মৃত রহমত হোসেনের মেয়ে হোসনা আক্তার আবেদন করেন। চাকরির পূর্ণ নিশ্চয়তার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্যের ছেলে মাইনুল হাসান তুষারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। মাইনুল হাসান তুষার হোসনা আক্তারের কাছে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দাবি করে।
হোসনা আক্তার নিজের স্বর্ণালঙ্কার বিক্রিসহ ধারদেনা করে চাকরি পাওয়ার আশায় সেই টাকা যোগাড় করেন। একই বছরের ৫ জুলাই সকালে জেলা শহরের মেড্ডা সবুজবাগে মাইনুল হাসান তুষারের হাতে চাকরির জন্য সাড়ে ৩ লাখ টাকা দেওয়া হয়। টাকা পাওয়ার পর তুষার তার বাবা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্যের সিল ও স্বাক্ষরসহ সুপারিশ করা একটি দরখাস্ত হোসনা আক্তারের কাছে দিয়ে তা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে দিতে বলেন এবং সিভিল সার্জনের নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলে বাসা থেকে বিদায় করেন।
অফিস সহায়ক পদে অন্য প্রার্থীদের চাকরি হলেও সুপারিশকৃত আবেদন জমা দেওয়ার পরও হোসনা আক্তারের চাকরি হয়নি। পরে লোকজন নিয়ে তুষারের বাসায় গিয়ে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি তা অস্বীকার করেন। এ নিয়ে বিভিন্নভাবে টালবাহানা করায় অবশেষে আদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগী।
বাদী পক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সদর) আদালতের হাকিম আফরিন আহমেদ হ্যাপি সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মাইনুল হাসান তুষার বলেন, ‘যে নারী আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তার নাম এ প্রথম শুনলাম। আমার বাবা ছয়বারের সংসদ সদস্য। তিনি মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। আজ পর্যন্ত আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে কোনো অনিয়মের অভিযোগ ওঠেনি। একটি পক্ষ আমাকে ও আমার বাবাকে রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি মামলা করেছেন। বিষয়টি প্রমাণ করার পর তাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবো।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম বলেন, ‘আদালত থেকে এখনো কোনো কাগজ এসে পৌঁছায়নি। হাতে কাগজ পেলে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’