স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসেন। পুরান ঢাকায় হাসপাতালটি হওয়ায় ঢাকার পাশের এলাকা থেকেও রোগীদের এখানে নিয়ে আসা হয়। ফলে প্রতিদিন চিকিৎসাসেবা ও বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য অনেক টাকা ব্যয় হয়। গত জুলাই থেকে এই আয়ের অংশ ব্যাংকে জমা না রেখে প্রয়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলায় অবশেষে হাসপাতালটির ক্যাশিয়ার আব্দুছ ছাত্তার মিয়াকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে দুদকের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে একটি টিম ক্যাশিয়ারকে গ্রেফতার করে বলে জানিয়েছেন দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
দুদকের হাতে গ্রেফতারের আগে টাকা আত্মসাতের ঘটনা সামনে আসার পর চারদিন ধরে ক্যাশিয়ারকে হাসপাতাল অফিসে আটকে রেখে হিসাব মেলানোর কাজ করে কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্র বলছে, হাসপাতালের ক্যাশিয়ার আব্দুস সাত্তার, হিসাবরক্ষক জাহেদুর রহিম, সহকারী পরিচালক মফিজুর রহমান মোল্লা ও উপপরিচলক ডা. মো. আলী হাবীবের যোগসাজশে ওই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ সন্দেহ করছে।
জানা গেছে, চলতি বছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা ও বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য আদায় করা সরকারি রাজস্ব (ইউজার ফি) বাবদ ২ কোটি ৫৪ লাখ ৪৩ হাজার ৪৪১ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ ক্যাশিয়ার আব্দুছ ছাত্তারের বিরুদ্ধে। যা দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
গত ১৯ ডিসেম্বর দুদকের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত মামলা দায়ের করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। নিয়মানুযায়ী আদায় করা টাকা প্রতিদিন নির্ধারিত কোডে ব্যাংকে জমা হওয়ার পর ভাউচারে স্বাক্ষর করে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ও উপপরিচালক কপি সংরক্ষণ করার কথা। কিন্তু দীর্ঘদিন ওই টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়নি।
চলতি মাসের শুরুর দিকে হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মো. রশীদ-উন-নবী ঘটনাটি জানতে পেরে ক্যাশিয়ারকে অফিসে আটকে রেখে হিসাব চূড়ান্ত করতে মৌখিক নির্দেশ দেন।
বছরখানেক আগে হাসপাতালের কোটি টাকার আলট্রাসাউন্ড মেশিন উধাও হওয়ার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় এমন টাকা আত্মসাতের মতো বড় ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন হাসপাতালের কর্মীরা।