দেশজুড়ে চলছে কঠিন লকডাউন ২য় দিন। বাজরে ক্রেতাদের উপস্থিতী কম থাকলেও নিত্য পণ্যের দাম কিন্তু কম নয়। রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে জানা যায় প্রায় সব ধরনের মাছ কেজিতে ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। দাম বেড়েছে ধরনের সবজির দাম। সয়াবিন তেল বিক্রয় হচ্ছে আগের দামেই।
ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বিপণনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন সয়াবিন তেলের দাম ৪ টাকা কমালেও খুচরা বাজারে এর প্রভাব পরেনি। আগের আগের দামেই সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগি, ডিম, পেঁয়াজ ও আলুর দাম।
ঘোষিত নতুন মূল্য অনুযায়ী, বোতলের এক লিটার সয়াবিন তেল ১৪৯ টাকা এবং খোলা এক লিটার সয়াবিন তেল ১২৫ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। এছাড়া বোতলের পাঁচ লিটার তেল ৭১২ টাকা এবং খোলা পাম সুপার এক লিটার ১০৮ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। তবে শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বোতলের এক লিটার সয়াবিন তেল ১৫৩ টাকা বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিন তেলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫ টাকায়। আর পাম সুপারের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে।
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার খুচরা ব্যবসায়ি আবুল কালাম জানান, তেলের দাম কমানোর কথা শুনেছি। কিন্তু নতুন দামের তেল এখনও আমরা পাইনি। নতুন দামের তেল এলে, তখন আমরাও দাম কমিয়ে বিক্রি করব। তবে নিত্য পণ্যের দাম আগের মতোই আছে বলা যায়।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ি, ডেমরা, মিরপুর-১, মিরপুর-৬, খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হয়েছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও এই ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকায়। ৮০০ গ্রাম বা এর চেয়ে কম ওজনের ইলিশ গতকাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায়। আকারভেদে শিং মাছ প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, রুই ২২০ থেকে ৩০০ টাকা, মৃগেল ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙাশ ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা, কাতল ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা, সিলভার কার্প ১৪০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে শিং মাছে কেজিতে ৫০ টাকা এবং অন্য মাছ গড়ে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
মাছ কিনতে আসা যাত্রাবাড়ির শাহিন বলেন, লকডাউনেরে অজুহাতে মাছ ব্যবসায়িরা সব ধরনের মাছ কেজিতে ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে। বাজরে সবকিছুর দামই বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে ব্রয়লার, সোনালী বা পাকিস্তানি কক মুরগি এবং লাল লেয়ার মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকার মধ্যে। সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকায়। মুরগির পাশাপাশি দাম অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের। গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর খাসির মাংসের কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা।
বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কচুরলতি ৬০ টাকা, পটল ও ঢেঁড়শ ৪০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কচুমুখী ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। ধুন্দুল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙার কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
সবজি বিক্রেতা রিপন বলেন, প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচকলার হালি ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং পেঁপের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম বাড়ান কারণ হচ্ছে বর্ষায় এখন প্রতিনিয়তই পানি বাড়ছে, সবজি খেত তলিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া অতি বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে গেছে, তাই চাহিদা অনুসারে সবজি আসছে না বাজারে। এর ফলে সবজির দাম বেশি।