দিনকে দিন বেড়েই চলছে বিশ্বের উষ্ণতা। যেসব দেশ আগে থেকেই উষ্ণ ছিল সেগুলো আরও উষ্ণ হচ্ছে। যা গ্রীষ্মের সাধারণ তাপমাত্রাকে হুমকির মুখে ফেলছে। আগে যেসব দেশে গরমই ছিল না, সেসব দেশে তাপ প্রবাহ বইতেও দেখা গেছে।
আর এই গরম থেকে বাঁচতে প্রচুর পরিমাণে বাতাস শীতল করার যন্ত্র এয়ার কন্ডিশনার (এসি) কিনছেন সাধারণ মানুষ। আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বর্তমানে বিশ্বে প্রতি সেকেন্ডে ১০টি করে এসি বিক্রি হচ্ছে। যা ২০৫০ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
তবে সাধারণ মানুষ এখন যেসব এসি কিনছেন সেগুলো দামে কম, এগুলোর গুণগত মান তেমন ভালো নয়। আবার লাখ লাখ মানুষ এসি কেনায় বিষয়টি জ্বালানি শক্তির ওপর প্রভাব ফেলছে। এসির সংখ্যা যতই বাড়ছে স্থানীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ওপর এটি ততই চাপ ফেলছে। এছাড়া জীবাশ্ম জ্বালানী থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যাওয়ার যে চেষ্টা করা হচ্ছে, সেটিও হুমকিতে ফেলে দিচ্ছে এসি।
২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, আগামী ৩০ বছর বিশ্বের মোট জ্বালানি চাহিদার অন্যতম বড় অংশ শুষে নেবে বাতাস শীতল করার যন্ত্রাংশ।
বর্তমানে ফ্যান, এসিসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশগুলো প্রতি বছর ২ হাজার টেরাওয়াট বিদ্যুৎ শুষে নিচ্ছে। এটি আফ্রিকায় প্রতিবছর ব্যবহৃত বিদ্যুৎের আড়াই শতাংশের সমান।
এখনই গ্রীষ্মকালে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অংশে এবং মধ্যপ্রাচ্যে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার বড় একটি অংশই ব্যবহৃত হয় বাতাস শীতলের পেছনে। সৌদি আরবে মোট বিদ্যুতের ৭০ শতাংশ ব্যয় হয় এসিতে। ভারত, চীন এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোতে যেখানে এসির সংখ্যা বাড়ছে, সেসব দেশে একটা সময় চাহিদা মেটানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।
এদিকে বিশ্বের উষ্ণতা বাড়ায় এবং নিজেদের ঠান্ডা রাখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় বর্তমানে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস করা বিশ্বের ১২০ কোটি মানুষ চরম ঝুঁকিতে আছেন। ২০২২ সালে এক প্রতিবেদনে গবেষণা সংস্থা সাসটেইনেবল এনার্জি ফর অল আরও জানিয়েছিল, বিশ্বের ২৪০ কোটি মধ্যবিত্ত মানুষ তাদের সাধ্য অনুযায়ী, বাতাস শীতলের যন্ত্রাংশ কেনার দ্বারপ্রান্তে আছেন।