বৈঠকে বসতে চলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। রোববার (২৩ জুলাই) উভয় নেতার এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে প্রতিবেশী বেলারুশের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের আগ্রাসনের বিষয়ে সতর্ক করেছিল রাশিয়া।
মস্কো বলেছিল, তার প্রতিবেশী এই দেশটির বিরুদ্ধে যে কোনও আগ্রাসন রাশিয়ার ওপর আক্রমণ হিসাবে বিবেচিত হবে। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো রোববার দেখা করবেন বলে ক্রেমলিন জানিয়েছে। মূলত বেলারুশের বিরুদ্ধে যে কোনও আগ্রাসন রাশিয়ার ওপর আক্রমণ হিসাবে বিবেচিত হবে বলে মস্কো ঘোষণা দেওয়ার দুইদিন পর এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
রয়টার্স বলছে, রাশিয়ার ভাড়াটে ওয়াগনার গ্রুপের যোদ্ধারা বেলারুশে যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় এই সপ্তাহের শুরুতে বেলারুশ সীমান্তের কাছাকাছি সামরিক ইউনিটগুলো সরানোর সিদ্ধান্ত নেয় পোল্যান্ড। এর জেরে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছিলেন, মিনস্কের প্রতি যে কোনও শত্রুতার প্রতিক্রিয়া জানাতে সমস্ত উপায় ব্যবহার করবে মস্কো।
ক্রেমলিন বলেছে, বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো রাশিয়ায় সফর করছেন এবং উভয় দেশের ‘কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ আরও জোরালো করার বিষয়ে পুতিনের সাথে কথা বলবেন তিনি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান চলছে টানা প্রায় দেড় বছর ধরে। রুশ এই আগ্রাসনের শুরু থেকেই রাশিয়ার পাশে রয়েছে প্রতিবেশী বেলারুশ। আর এরই জেরে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামাসহ বিভিন্ন সময়ই নানা ধরনের হুমকি দিয়ে এসেছে দেশটি।
এছাড়া ইউক্রেনে নিজের সৈন্য না পাঠালেও ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ আক্রমণ শুরু করার জন্য মস্কোকে বেলারুশিয়ান অঞ্চল ব্যবহার করার অনুমতি দেন লুকাশেঙ্কো এবং এরপর থেকে পুতিনের সঙ্গে বেশ কয়েকবারই দেখা করেছেন তিনি।
একে অপরের কট্টর মিত্র এই দুই দেশ একাধিক যৌথ সামরিক প্রশিক্ষণ মহড়া চালিয়েছে এবং চলতি বছরের জুন মাসে লুকাশেঙ্কো তার দেশকে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতি দেন। আর এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে নিন্দা জানিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার বেলারুশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ওয়াগনার গ্রুপের ভাড়াটে যোদ্ধারা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য পোল্যান্ডের সীমান্ত থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে একটি সামরিক রেঞ্জে বেলারুশিয়ান বিশেষ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো ইউরোপের দীর্ঘতম শাসক। গত ২৮ বছর ধরে তিনি বেলারুশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বেলারুশিয়ান এই প্রেসিডেন্ট রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমর্থন তাকে ২০২০ সালে গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভের পরও টিকে থাকতে সাহায্য করেছিল।
এছাড়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে সমর্থনের জন্য সাবেক এই সোভিয়েত রাষ্ট্রের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশ বিলিয়ন ডলার মূল্যের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।