আগামী বাজেটে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধি এবং মহার্ঘ্য ভাতা থাকবে কি না সে বিষয়ে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কোনো মহার্ঘ্য ভাতা থাকছে না জানিয়ে তিনি বলেন, ইনফ্লেশন যত বাড়বে সামঞ্জস্য রেখে একটা পারসেন্টে বেতন বাড়বে।
সোমবার (১৫ মে) বিকেলে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুলের করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ প্রসঙ্গে কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৫ সালে আমরা যখন বেতন ভাতা বৃদ্ধি করি, আমরা একটা গবেষণায় দেখেছিলাম যে, ইনফ্লেশনের (মুদ্রাস্ফীতি) সাথে সাথে একটা পারসেন্ট হারে বেতন বাড়বে। প্রতি বছরের হিসাব মতে ইনফ্লেশন যত বাড়বে তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমরা বেতন বাড়াই। অনেক সুযোগও দিয়েছি, বৈশাখী ভাতা থেকে শুরু করে, ফ্ল্যাট কেনার ভাতা, গাড়ি কেনার লোন ইত্যাদি।
যেহেতু ইনফ্লেশন কিছু বৃদ্ধি পেয়েছে, আমরা সেই জায়গায় আবার কতটুকু পর্যন্ত সুযোগ দেওয়া যায় সেই চিন্তা-ভাবনা করছি। কমিশন কর, এটা কর, সেটা কর, এতে খুব বেশি লাভ হয় না। কিছু লোক বঞ্চিত হয়ে যায়, আর কিছু লোক লাভবান হয়। এ জন্য প্রতি বছরের হিসাব মতো ইনফ্লেশন যত বাড়বে তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমরা বেতন বাড়াব। তাছাড়া অনেক সুযোগও দিয়েছি। বৈশাখী ভাতা থেকে শুরু করে ফ্ল্যাট কেনার লোন, গাড়ি কেনার লোনসহ অনেক সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বেতন যেভাবে বাড়িয়ে দিয়েছিলাম সেটা কিন্তু সবার জন্যই। তাই আমাদের মহার্ঘ্য ভাতার দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। যেহেতু ইনফ্লেশন বেড়ে গেছে, তাই ক্রয়ক্ষমতা অনুযায়ী এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন যেন বাড়তে পারে সেই ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।
বেসরকারি খাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা তাদের বিষয়। এটা সরকারের ব্যাপার না। বেসরকারি খাত করোনা ভাইরাসের সময় যেন বিপদে না পড়ে তার জন্য প্রণোদনা দিয়েছি। তাদেরকে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হয়েছে। সেখানে আমরা ভর্তুকিও দিয়েছি। এই ভর্তুকিটা বাজেটে বিপদে ফেলেছে।
এ সময় শেখ হাসিনা আবারও বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে এমন ভর্তুকি দেয় না। বিদ্যুতে ভর্তুকি দেওয়ায় কে বেশি লাভ পায়? যে সবচেয়ে বেশি এয়ারকন্ডিশন চালায় তার লাভ হয়। গরিব মানুষের তো লাভ হয় না। আসলে লাভবান হচ্ছেন বিত্তশালীরা। সব জায়গায় জ্বালানি তেল, পরিবহন এত বেড়েছে। এটা টানা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। যে দামে উৎপাদন হবে সেই দামে কিনতে হবে। যে যতটুকু পারবেন ততটুকু কিনবেন। সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করে এসব জায়গায় ভর্তুকি দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই।