উদ্বোধন স্বপ্নের মেট্রোরেল। বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আধুনিক মেট্রোরেল যুগে প্রবেশ করল। যার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে উত্তরার দিয়াবাড়িতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ এর প্রথম অংশ উদ্বোধন করেন। এর মাধ্যমে নতুন যুগের সূচনা হয়েছে যানজটের শহর ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থায়।
আনুষ্ঠানিকভাবে আজ বুথবার (২৮ ডিসেম্বর) উদ্বোধন হলেও স্বপ্নের মেট্রোরেলে চড়তে যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হবে আরও ১ দিন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে মেট্রোরেলে যাত্রী পরিবহন চলবে সীমিত পরিসরে। আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের দিন থেকে চলবে পুরোদমে। সাধারণ যাত্রীরা আগামীকাল থেকেই মেট্রোরেলে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন।
বুধবার উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মেট্রোরেলে চড়ে আগারগাঁও যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের দিনে আরও বিভিন্ন পর্যায়ের ২০০ জনের মতো অতিথি মেট্রোরেলে চলার সুযোগ পাবেন। তাদের ৫০০ টাকা দিয়ে স্থায়ী কার্ড সংগ্রহের জন্য বলা হয়েছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম মঙ্গলবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, উত্তরা থেকে আগারগাঁও, ঐতিহাসিক যাত্রার জন্য প্রস্তুত। সকল আমন্ত্রিত অতিথিকে নিজের টাকায় ৫০০ টাকার (টিকিট) রিচার্জ কার্ড কিনতে বলা হয়েছে। প্রথম দিকে স্টেশনে দুই ধরনের কার্ড পাওয়া যাবে। স্থায়ী ও এক যাত্রার (সিঙ্গেল জার্নি) কার্ড। শুরুতে মেট্রোরেল স্টেশন থেকেই এই কার্ড কিনতে হবে। পরে পর্যায়ক্রমে স্টেশনের বাইরে কার্ড বিক্রির জন্য কিছু প্রতিষ্ঠান নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ১০ বছর মেয়াদি স্থায়ী কার্ড কিনতে হবে ২০০ টাকা দিয়ে। এই টাকা জামানত হিসেবে থাকবে। এই কার্ড দিয়ে যাতায়াতের জন্য প্রয়োজন মতো টাকা রিচার্জ করা যাবে। মেট্রোরেলে মুক্তিযোদ্ধারা ফ্রি যাতায়াত করতে পারবে।
প্রাথমিকভাবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ছয়টি বগি বিশিষ্ট ১০ সেট ট্রেন চলাচল করবে। আপাতত এই রুটে ধীরগতিতে ট্রেন চলবে। এই পর্যায়ে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ট্রেন চলবে, পরে চলাচলের সময় বাড়ানো হবে এবং চাহিদা অনুযায়ী ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে। পূর্ণ গতিতে ট্রেন চলাচল শুরু হলে প্রতি সাড়ে ৩ মিনিট অন্তর একটি ট্রেন চলবে। প্রতিটি স্টেশনে, যাত্রীদের ওঠা ও নামা সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ট্রেনটি অপেক্ষা করবে। প্রতিটি ট্রেন ২ হাজার ৩০০ জন যাত্রী নিয়ে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে। তবে বাঁকযুক্ত এলাকায় গতি কম হবে। উত্তরা থেকে মতিঝিল-কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটারের পুরো রুটটি ৪০ মিনিটেরও কম সময়ে ভ্রমণ করে মেট্রোরেল প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।