মিয়ানমারের অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর দেশটির সামরিক বাহিনীর নৃশংস অভিযানের নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্বের ১২টি দেশের প্রতিরক্ষা প্রধান। রোববার এক যৌথ বিবৃতিতে গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীদের ওপর সেনাবাহিনীর সহিংস অভিযানের নিন্দা এবং অবিলম্বে তা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
এর আগে, শনিবার দেশজুড়ে অভ্যুত্থানবিরোধীদের ওপর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১১৪ জনের প্রাণহানি ঘটে। গত ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে একদিনে সর্বোচ্চ প্রাণহানির ঘটনা এটি।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে ১২ দেশের প্রতিরক্ষা প্রধানদের বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া। এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পেশাদার সামরিক বাহিনী তাদের আচরণের জন্য সর্বদা আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে। দেশের জনগণের ক্ষতি নয় বরং তাদের সুরক্ষার দায়-দায়িত্ব সামরিক বাহিনীর।’
‘আমরা মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীকে সহিংসতা বন্ধ এবং জনগণের কাছে হারিয়ে ফেলা শ্রদ্ধা এবং আস্থা পুনরুদ্ধারে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, গ্রিস, ইতালি, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস এবং নিউজিল্যান্ডও স্বাক্ষর করেছে। শনিবার মিয়ানমারে ১১৪ বিক্ষোভকারীকে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি করে হত্যার পর বিরল এই বিবৃতি দিয়েছে ওই ১২ দেশ। জাতিসংঘের তদন্তকারীরা মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর এই হত্যাকাণ্ডকে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছেন। নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশুও রয়েছে।
অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়ে আসা দেশটির দ্য জেনারেল স্ট্রাইক কমিটি অব ন্যাশনালিটিজ (জিএসসিএন) এক ফেসবুক পোস্টে বলেছে, আমাদের বীরদের স্যালুট জানাচ্ছি; যারা এই আন্দোলনের সময় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমরা এই আন্দোলনে অবশ্যই জয়ী হবো।
শনিবারের বিক্ষোভে নিরাপত্তাবাহিনীর সহিংসতার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে দেশটির জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন। শনিবার তারা থাই সীমান্তের কাছে সেনাবাহিনীর একটি নিরাপত্তা চৌকি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এতে একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল-সহ অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। তবে সেখানে সংঘাতে জাতিগত সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর এক সদস্যেরও প্রাণ গেছে।
এই হামলার জবাবে কারেন অধ্যুষিত একটি গ্রামে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত তিনজনের প্রাণ গেছে।
সেনাবাহিনীর বিমান হামলার মুখে ওই গ্রামের কয়েকশ বাসিন্দা জঙ্গলে পালিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর কোনও মন্তব্য জানা যায়নি।