২০২৩ সালের বিশ্বকাপের স্মৃতিটা যেন এখনো উজ্জ্বল বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের মাঝে। বিশ্বকাপের পর টেস্ট আর ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় এলেও এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের ব্যর্থতাই টাইগার ক্রিকেটের বড় ইস্যু। বৈশ্বিক আসরের ঠিক আগে অনেকটা নাটকীয়ভাবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। নানান বিতর্ক থাকলেও ২০১৯ বিশ্বকাপের মত আরেকটি অতিমানবীয় পারফরম্যান্স সাকিব থেকে ঠিকই আশা করেছিল ক্রিকেটের ভক্তরা।
কিন্তু সাকিব পারেননি তাদের সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে। ইনজুরির কারণে ম্যাচ যেমন মিস করেছেন, তেমনি যেসব ম্যাচে ছিলেন তাতেও খুব বেশি সাকিব-সুলভ পারফরম্যান্স দেখা যায়নি তার কাছ থেকে। বিশেষ করে ব্যাট হাতে টাইগার কাপ্তান ছিলেন পুরোপুরি নিষ্প্রভ। লম্বা সময় পর অবশ্য এমন ব্যর্থতার কারণ নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি।
মাগুরায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় যাচ্ছে সাকিবের। এরইমাঝে ক্রিকবাজের মুখোমুখি হয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সেখানেই তিনি জানালেন, বিশ্বকাপের পুরোটা সময় চোখের সমস্যায় ভুগেছেন তিনি। মূলত স্ট্রেস থেকেই এমন সমস্যার উৎপত্তি বলেও নিশ্চিত করেছেন সাকিব, ‘বিশ্বকাপে কেবল এক কিংবা দুই ম্যাচের জন্য না, বরং পুরোটা বিশ্বকাপই আমি চোখের সমস্যায় ভুগেছি।’
ক্রিকবাজের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল, সাকিব কি সেক্ষেত্রে কেবল এক চোখের সাহায্যে অনুমাননির্ভর ক্রিকেটই খেলেছেন কিনা। জবাবে তার সহজ উত্তর, ‘এমনটা হতেই পারে। বল মোকাবেলা করতে আমার খুবই অস্বস্তি হতো।’
চিকিৎসাশাস্ত্রের বক্তব্য, কোন ব্যক্তি ব্যাপক পরিমাণ মানসিক চাপ বা স্ট্রেসের মধ্যে থাকলে তার চোখে সমস্যা দেখা দিতে পারে। চোখ মস্তিষ্কের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকায়, স্ট্রেস হরমোনের নিঃসরণ চোখের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এই হরমোনের নিঃসরণ রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। যাতে দৃষ্টিশক্তিতে বাঁধা দেখা দেয়।
সাকিব জানান, ‘যখন আমি সেখানে (ভারতে) ডাক্তারের কাছে যাই, তখনও আমার কর্ণিয়া বা রেটিনায় পানি জমে ছিল। তারা আমাকে ড্রপ্স দিয়েছিল আর এও বলা হয়েছিল মানসিক চাপ কমাতে। আমি জানিনা এটাই সমস্যার (চোখের দৃষ্টি কমে আসা) কারণ কিনা। কিন্তু যখন আমি আবার আমেরিকায় (বিশ্বকাপের পর) পরীক্ষা করাই, আমার কোনো চাপ ছিল না। আমি ডাক্তারকে বলেছিলাম, বিশ্বকাপ নেই। তাই চাপও নেই।
সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপে সাকিব একবারই নিজের সেরাটা দেখাতে পারেননি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে অর্ধশতক পেরিয়ে শতকেরই কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন টাইগার অধিনায়ক। তবে সেটাও পাওয়া হয়নি। ২০১৯ সালে সাকিবের ব্যাট থেকে এসেছিল ৬০৬ রান। বিপরীতে ২০২৩ বিশ্বকাপে করেছেন মোটে ১৮৬ রান।